বুধবার ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে কার্যত দিশেহারা পরিস্থিতি এখন রাজ্যের। নবান্ন সূত্রে জানান হয়েছে, সুপার সাইক্লোন এখনও পর্যন্ত ৮৬ জনের প্রাণ কেড়েছে। প্রশাসনের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে সব থেকে বেশি ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে গাছ চাপা পড়ে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ২২ জন এবং দেওয়াল চাপা পড়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়-সহ অন্যান্য কারণেও কয়েক জন মারা গিয়েছেন।
ঝড়ের তাণ্ডবের পর ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও বহু এলাকায় টেলি-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার সরেজমিন পরিস্থিতি এখনও নবান্নের কাছে এসে পৌঁছয়নি। তার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
সরকার থেকে দাবি করা হচ্ছে ৬ লক্ষেরও বেশি দুর্গত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। ৫১৩৬টি ত্রাণ শিবির চালু রয়েছে এবং সেগুলির জন্য প্রায় দেড় হাজার অস্থায়ী রান্নাঘর চলছে। তবে বহু বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি নিয়ে অসন্তোষ-অভিযোগও আসছে। এরসঙ্গেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং জলের আকাল পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ঘূর্ণিঝড় আমফান যখন প্রবল তাণ্ডব চালাচ্ছিল তখন নবান্নেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমফানের তাণ্ডব দেখে লড়াকু নেত্রীকে অনেকটাই ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল। এমনকি ঝড়ের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কেন্দ্রকেও অনুরোধ করেন মমতা। সেই ডাকে সারা দিয়ে শুক্রবার রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষয়তি দেখার পর ১ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করেন।
জানা যাচ্ছে শনিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, বাসন্তী, নামখানা ও কাকদ্বীপ ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর কাকদ্বীপে করবেন প্রশাসনিক বৈঠক। ইদের পর সোমবার থেকে ফের শুরু করবেন জেলা সফর। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মন্ত্রীদের নিয়ে একটা দল তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা আমফান বিধ্বস্ত বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে থাকবেন।