দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিলেন আধুনিক ভাষাবিদ্যার জনক নোয়াম চমস্কি সহ প্রায় ২৬১ জন শিক্ষাবিদ। চিঠিতে লেখা রয়েছে, “বরখাস্তের আদেশেই বোঝা যাচ্ছে যে, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের (বিদ্যুৎ চক্রবর্তী) নেতৃত্বে কীভাবে ন্যায়বিচারের নীতি লঙ্ঘন করা হচ্ছে।"
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ কাজ করার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিষয়টি উত্থাপন করে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিলেন সুপরিচিত আমেরিকান ভাষাবিদ নোয়াম চমস্কি সহ প্রায় ২৬১ জন শিক্ষাবিদ। বিশিষ্ট জনেরা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে স্বয়ং রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন।
৯ জানুয়ারি লেখা এই চিঠিতে বিশ্বভারতীর পদক্ষেপটিকে ‘নির্ভরভাবে বেআইনি’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জানানো হয়েছে, সেগুলি যাচাই করার জন্য কোনও যথাযথ তদন্ত করা হয়নি।
আধুনিক ভাষাবিদ্যার জনক চমস্কি ছাড়াও, এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন উৎসা পট্টনায়েক, পার্থ চ্যাটার্জি, উমা চক্রবর্তী, অমিত ভাদুড়ি, অমিয় বাগচী, প্রভাত পট্টনায়ক, হরবন মুখিয়া, সুনন্দা সেন, সবুজ কালী সেন, জয়তী ঘোষ, নিবেদিতা মেননের মতো শিক্ষাবিদরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত করা সাধারণ ন্যায়বিচার নীতির পরিপন্থী ছিল। চিঠিতে লেখা রয়েছে, “বরখাস্তের আদেশেই বোঝা যাচ্ছে যে, বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য (বিদ্যুৎ চক্রবর্তী), তাঁর নেতৃত্বে কীভাবে ন্যায়বিচারের নীতি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিশ্বভারতীর পরিদর্শক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও অধ্যয়নের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে, আমরা আপনাকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করছি, যাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শিক্ষালয়টি, যেখানে শিক্ষার্থীদের চেতনা উৎসাহিত হয়, সেখানকার কর্তৃপক্ষের দ্বারা কৃত প্রতিহিংসা, ভীতিপ্রদর্শন এবং উচ্ছৃঙ্খলতার পরিবর্তে মন ভয়মুক্ত হয়।”
বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর তাঁর চাকরির অবসানের চিঠি পেয়েছিলেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অশোক মাহাতো ওই চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদ।
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল যে, গুরুতর অসদাচরণে জড়িত ছিলেন এই অধ্যাপক। সেই কারণে তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু, বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একটি বৃহত্তর অংশ প্রফেসরের বরখাস্তকরণটিকে উপাচার্যের ‘প্রতিহিংসামূলক কাজ’ হিসাবে বর্ণনা করেছে, যার বিরুদ্ধে সুদীপ্ত ভট্টাচার্য একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় পদধারীর কাছে।
আরও পড়ুন-
সাগর থেকে প্রবেশ করা উষ্ণ হাওয়ার জেরে আপাতত থমকে উত্তুরে বাতাস, জেলায় জেলায় কুয়াশার দাপট
কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভ ‘অভব্যতা’, রাজ্যে আসছে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল
অনুব্রতর গড়ে হাল ধরতে যাচ্ছেন স্বয়ং মমতা, জানুয়ারি মাসেই বীরভূমে তৃণমূলনেত্রীর আবির্ভাব