ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড় 'দানা'! ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোথায় কখন আঘাত হানতে পারে জেনে সতর্ক হোন
ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র আঘাতের আশঙ্কায় বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে প্রস্তুতি শুরু। পুরী ও সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়।
deblina dey | Published : Oct 22, 2024 7:41 AM IST / Updated: Oct 22 2024, 02:14 PM IST
ঘূর্ণিঝড় 'দানা' এখনও বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানেনি। তবে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সাগরদ্বীপ ও পুরীর মাঝামাঝি কোথাও আঘাত হানতে পারে।
তার আগে দুই রাজ্যের প্রশাসনই সতর্ক রয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে সমুদ্র সৈকত শহর পুরী দৃশ্যত পর্যটক-মুক্ত হয়ে উঠছে। ওড়িশা সরকার রাজ্যের বাইরের পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের বুধবারের আগে পুরী ছেড়ে যেতে বলেছে।
তাদের নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারও পর্যটকদের বৃহস্পতি ও শুক্রবার পুরীতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বাংলায়ও, প্রশাসন পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা - দুটি উপকূলীয় জেলায় আগাম সতর্কতা নিয়েছে।
বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সোমবার থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নামখানা, সাগরদীপ, পাথরপ্রতিমা, বকখালি সহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং শুরু করেছে প্রশাসন। 'ফ্লাড শেল্টার' বা বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপ এলাকায় মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘা, মন্দারমণি, তাজপুর সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে কড়া নজর রাখছে রাজ্য প্রশাসন।
আগামী কয়েকদিন দীঘা ও আশেপাশের সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা যাতে সাঁতার কাটতে না পারে তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুসারে, নিম্নচাপ এলাকাটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হবে, প্রথমে একটি নিম্নচাপে পরিণত হবে, তারপর একটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং বুধবার সকালের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। এটি জল অঞ্চলের উপর দিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এর শক্তি বৃদ্ধি পাবে। বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশা ও বাংলার উপকূলে পৌঁছালে এটি একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
এটি পুরী এবং সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী জমিতে প্রবেশ করবে। সে সময় উপকূলে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০-১১০ কিলোমিটার হতে পারে।
ইতিমধ্যেই উত্তাল হতে শুরু করেছে সাগর। আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার থেকে পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার সাগর আরও উত্তাল হবে।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বাংলা ও ওড়িশার উপকূলের কাছে সাগর উত্তাল থাকবে। সে সময় বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে জেলেদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল।
এই বিপর্যয় বাংলার আটটি জেলাকে প্রভাবিত করতে পারে - দুটি ২৪ পরগনা, দুটি মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা এবং বাঁকুড়া।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উভয় রাজ্যেই ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি বিভাগ সোমবার কৃষকদের জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে।
বলা হয়েছে, ধানের শীষের ৮০ শতাংশ পেকে গেলে দ্রুত ফসল তুলতে হবে। কাটা ধান জমিতে না ফেলে দ্রুত ক্ষেতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষকদেরও অনুরোধ করা হয়েছে।
পেঁপে, কলা, বিভিন্ন সবজি, সুপারি ও ডাল দিয়ে ক্ষেতে জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক করার সুপারিশ করা হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কোনও রাসায়নিক বা কীটনাশক ব্যবহারও নিষিদ্ধ।