মোকার অভিমুখ বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও দুর্যোগ মোকাবিলায় তৈরি রাজ্য। মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় বাহিনীর ৮টি দল। খালি করা হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকা।
ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় মোকা। ভারতের আবহাওয়া দফতর শুক্রবারই সতর্কতা জারি করেছে এটি একটি খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। বর্তমানে মোকার অবস্থান দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও তীব্রতার সঙ্গে উত্তর - উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। সেই কারণে বাংলা-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যকে ,সতর্ক করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকা মধ্যবর্তী দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ ও উত্তর মায়ানমান উপকূল অতিক্রম করে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মায়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী কোনও স্থানে আছড়ে পড়তে পারে। আগামী ১৪ মে দুপুরের দিকে সিত্তওয়ের কাছে এটি একটি অত্যান্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিতে পারে। যার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার। ভারতের আবহাওয়া দফতরের অনুমান সেই সময় বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৭৫ কিলোমিটার ঘণ্টা হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোকা পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়বে না বলেও মনে করছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। কিন্তু তারপরেও এই নবান্ন বেশ কিছু সতর্কতা জারি করেছে। রাজ্যের বাসিন্দাদের সাবধানে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছে। আগেই মৎসজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করেছে। যারা ইতিমধ্যেই মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে গিয়েছে তাদের ফিরে আসতেও বলেছে। উপকূলবর্তী ও নিচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলেছে। আবহাওয়া দফতর বৃহস্পতিবারই মোকার কারণ উত্তর পূর্বের কয়েকটি রাজ্য ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কারণে বৃষ্টি হবে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্য সরকারও মোকার মোকাবিলায় প্রস্তুত। নবান্ন সূত্রের খবর ঘূর্ণিঝড় মোকার মোকাবিলায় রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৮টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ-এর দল মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিআরএফ সূত্রে বলা হয়েছে পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোকা ১২ মে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। একদিন ধরে সেটি আরও শক্তি বাড়িয়ে ১৪ মে আরও শক্তিশালী ঝড়ের আকার ধারণ করতে পারে। সেই কারণেই এই রাজ্যে ২০০ জন উদ্ধারকারী মোতায়েন করা হয়েছে। ১০০ জনকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, মোকা-র মোকাবিলার জন্য রাজ্যেসরকার পূর্ব মোদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিচু এলাকা ও সুন্দরবন এলাকার পাঠিয়েছে, পানীয় জলের পাউচ, গুঁড়ো দুধ, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ। আবাহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই রাজ্যের পাশ দিয়ে বয়ে যাবে মোকা। কিন্তু আচমকাই যদি রাস্তা পরিবর্তন করে, তাই আগে থেকেই তৈরি রয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার থেকেই রাজ্যের তিনটি উপকূলবর্তী জেলার বাসিন্দা ও বিশেষত পর্যটকদের সমুদ্রে না যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দিঘায় ইতিমধ্যেই পৌছে গেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।