এক বছর আগে অনলাইনে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় ওই কিশোরীর। ওই যুবক আসলে পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরিচয় ভাঁড়িয়ে কথা বার্তা চালিয়ে যেতে থাকে যুবক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো লেগেছিল একজনকে। ভাললাগার আবেশ কখন ভালোবাসাকে ছুঁয়ে ফেলেছে-১৪ বছরের সদ্য কিশোরী মন বুঝতেও পারেনি। ঘোর যখন ভেঙেছে, তখন মানবপাচার চক্রের কবলে সে। বাংলার এক গ্রাম থেকে পাচার হয়ে যাওয়া ১৪ বছরের কিশোরী উদ্ধার হয় দিল্লি থেকে।
এক বছর আগে অনলাইনে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় ওই কিশোরীর। ওই যুবক আসলে পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরিচয় ভাঁড়িয়ে কথা বার্তা চালিয়ে যেতে থাকে যুবক। ধীরে ধীরে ওই কিশোরীর বিশ্বাস অর্জন করে নেয় সে। তার সঙ্গে দেখা করে একাধিকবার। সম্পর্ক গভীর হতেই দিল্লিতে যাওয়ার প্রস্তাব সে দেয় কিশোরীকে।
এরপরের ঘটনায় গায়ে কাঁটা দেবে আপনার। এরকম একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে দিল্লিতে নিয়ে পাচার করার চেষ্টা করা হয় ওই মেয়েদের। পাচার হয়ে যাওয়া মেয়েদের নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মীরা জানাচ্ছেন, এখন পাচারের পথ তৈরির ব্যাপারে বড় ভূমিকা নেয় মোবাইল ফোন ও ফেসবুকের মতো সোস্যাল মিডিয়া। পাচারকারীরা তার মাধ্যমেই মেয়েদের জালে ফেলে। ফলে পুলিশ ও অসকরারি সংস্থা গুলির কাজ আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে আবার কাজ দেওয়ার নাম করে আড়কাঠিরা দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের নিয়ে যায়। পরিবারের আর্থিক স্বাচ্ছন্দের স্বপ্নে বাড়ির লোকও তাতে বাধা দেন না। ভাল করে খোঁজখবরও করেন না যে, মেয়ে কোথায় যাচ্ছে। পরে যখন সব জানতে পারেন তখন লোকলজ্জার ভয়ে পুলিশের কাছে যেতে চান না। বা যখন পুলিশের কাছে যান তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। মেয়ে নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে।
এনজিও অনুসারে, সাধারণত, ছত্তিশগড়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসম থেকে প্রচুর মহিলা এবং মেয়েরা রাজধানী দিল্লিতে পাচার হয়ে যায়। যদিও কিছু লোককে পাচার করা হয় সামান্য কাজের জন্য, যেমন ইট ভাটায় কাজ করা বা অন্যান্য নির্মাণ কার্যক্রম। অনেককেই যৌন কাজে ঠেলে দেওয়া হয়। দিল্লি পুলিশ আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে মানব পাচারের শিকারদের উদ্ধারে ২২% বেশ সফল হয়েছে বলে জানাচ্ছে পরিসংখ্যান।
২০২৩ সালে ৮৩৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০২২ সালে উদ্ধার করা হয় ৬৮৭ জনকে। বছরে নথিভুক্ত করা হয় ১০৭টি মামলা। কিন্তু সচেতনতা বাড়ছে কি? সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কিশোরী-তরুণীদের ফাঁদে ফেলা মোটেই শক্ত নয় বলেই মনে করছেন সমাজকর্মীরা। ফলে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে প্রশাসনের সামনে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।