সুদূর কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন মা সারদা। সেই পথে অন্ধকার জঙ্গলের মধ্যে ঘাপটি মেরে ছিল বাংলার কুখ্যাত ডাকাত রঘু আর গগন।
বাংলার কালী পুজোর সঙ্গে ডাকাতদের কর্মকাণ্ড ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এর মধ্যে যেমন জুড়ে আছে প্রচণ্ড ভক্তির ইতিহাস, তেমনই গ্রামে গ্রামে রয়েছে ভয়ঙ্কর হত্যা এবং লুঠের লোককথাও। তেমনি বাংলার এক ঐতিহাসিক কালীপুজো হল হুগলি জেলার সিঙ্গুরের ডাকাত কালী পুজো। এই পুজোর সঙ্গে জুড়ে আছে শ্রী রামকৃষ্ণদেবের স্ত্রী সারদাময়ীর কাহিনী।
কথিত আছে, প্রায় ৫০০ থেকে সাড়ে পাঁচশো বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর মন্দির। বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাত কালী মন্দির অবস্থিত। একসময়ে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে দেখার জন্য আকুল হয়ে উঠেছিলেন তাঁর স্ত্রী সারদাময়ী।
সুদূর কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই পথে অন্ধকার জঙ্গলের মধ্যে ঘাপটি মেরে ছিল বাংলার কুখ্যাত ডাকাত রঘু আর গগন। দুই ডাকাত এবং তাদের দলবল মিলে সারদা মায়ের পথ আটকে দাঁড়ায়। সারদাকে টেনে যখন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেই সময়েই ঘন জঙ্গলের মধ্যে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে আবির্ভূতা হলেন দেবী কালী।
মা কালীর রক্তচক্ষু আর ভয়াল রূপ দেখে ডাকাতদের অবস্থা তখন শোচনীয়। সঙ্গে সঙ্গে মা সারদাকে চিনতে পারলেন রঘু এবং গগন ডাকাত। ভুল বুঝতে পেরে তাঁরা কাতর কণ্ঠে ক্ষমা চাইলেন সারদাময়ীর কাছে। অন্ধকার জঙ্গল দিয়ে রাত্রিবেলা আর এগিয়ে যাওয়া নিরাপদ হবে না বলে সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানাতেই মা সারদার থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ডাকাতরা।