বলি দেওয়ার জন্য সাধক রামপ্রসাদকে বন্দি করেছিল দুর্ধর্ষ বিশু ডাকাত! তাঁকে কি সত্যিই রক্ষা করেছিলেন মা ভবানী?

আজও কালী আরাধনা মানে প্রথমেই ভেসে ওঠে রামপ্রসাদী গান। কে ছিলেন এই রামপ্রসাদ সেন? 

Sahely Sen | Published : Nov 12, 2023 8:51 AM IST

একবার কলকাতা থেকে হাঁটা পথে হালিশহর ফেরার পথে রামপ্রসাদকে বন্দী করেছিল বিশু ডাকাত বা বিশে ডাকাত। উপাস্য দেবী চিত্তেশ্বরীর সামনে বলি দেওয়ার জন্য বন্দী হলেন রামপ্রসাদ। হাঁড়িকাঠের সামনে মৃত্যু আসন্ন জেনে রামপ্রসাদ শুরু করেছিলেন দেবীস্তুতি। বিশে ডাকাত তা দেখে চমকে উঠেছিল আর নিজের ভুল বুঝতে পেরে রামপ্রসাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল।

-
তেমনই এই মন্দিরের পাশেই চিত্তেশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরকে নিয়ে রয়েছে আরও একটি কাহিনি।  মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত দেবী নাকি আগে দক্ষিণমুখী ছিলেন। একদিন সাধক কবি রামপ্রসাদ নৌকায় গান গাইতে গাইতে যাচ্ছিলেন। তাঁর গান শোনার জন্য দেবী নাকি পশ্চিমমুখী হয়েছিলেন। তেমনই জয়নারায়ণ ঘোষাল প্রতিষ্ঠিত দুর্গা পতিতপাবনীকে দেখে রামপ্রসাদ গেয়ে উঠেছিলেন “পতিতপাবনী পরা, পরামৃত ফলদায়িনী...” গানটি। এলাকার নাম ভূকৈলাস তাঁরই দেওয়া।

Latest Videos

-
রামপ্রসাদ যে সময়ের মানুষ সেই সময়টা নানা কারণেই ঘটনাবহুল। সমাজে নানা বিপর্যয় এবং পরিবর্তন চলছে। বর্গী হানা, ১৭৫৭-র পলাশীর যুদ্ধ থেকে মন্বন্তর। এ সবের ভয়াবহ প্রভাব পড়েছিল বাংলার সাধারণ মানুষের উপর। সে সময় রামপ্রসাদের গান হয়ে উঠেছিল মানুষের বড় একটা আশ্রয়।

রামপ্রসাদের ঠাকুরদা রামেশ্বর সেন ও বাবা রামরাম সেন দু’জনেই ছিলেন চিকিৎসক। তৎকালীন কুমারহট্টে জন্মেছিলেন রামপ্রসাদ। আজকের হালিশহর। এলাকায় রামপ্রসাদের পরিবারের বেশ নামডাক ছিল। রামপ্রসাদের মায়ের নাম ছিল সিদ্ধেশ্বরী দেবী।

-
বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে রামপ্রসাদ সেন উপার্জনের আশায় হাজির হয়েছিলেন কলকাতায়। তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই নিধিরাম তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন উত্তর কলকাতার জমিদার দুর্গাচরণ মিত্রের কাছারিতে। কাজে তার একেবারে মন ছিল না। কাজের সময় কেমন যেন আনমনা হয়ে থাকতেন। এ ভাবেই একদিন হিসেবের খাতায় লিখলেন, "আমায় দে মা তবিলদারী"।  দেখতে দেখতে ভাবুক রামপ্রসাদের সেরেস্তার খাতা হয়ে উঠল গানের খাতা। ব্যাপারটা যখন মিত্র মশায়ের কাছারিতে জানাজানি হল তখন সকলে ভাবলেন এই বুঝি রামপ্রসাদের চাকরিটা গেল। কিন্তু  হল একেবারে উলটো। রামপ্রসাদের উদাত্ত গলায় শ্যামাসঙ্গীত শুনে মোহিত হয়ে গেলেন মিত্রমশাই। তিনি রামপ্রসাদকে কিছু টাকা হাতে দিয়ে হালিশহরে ফিরে যেতে বললেন। শুধু তাই নয় বললেন, "তোমার মাসিক তিরিশ টাকা বৃত্তির ব্যবস্থা করছি তুমি সময়মতো বাড়ি বসেই তা পাবে। তুমি গান ও সাহিত্য ছেড়ো না।'  প্রতিশ্রুতি মত টাকা পৌঁছত রামপ্রসাদের কাছে। যদিও সে বৃত্তি নানান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায়।

-
পরে নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় রামপ্রসাদকে সভাকবি হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু, রামপ্রসাদ বিনীত ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন। যদিও রাজার দেওয়া জমি তিনি গ্রহণ করেছিলেন।মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অনুরোধেই তিনি 'বিদ্যাসুন্দর' কাব্য রচনা করেছিলেন।

-
আর্থিক অনটনে ভরা জীবনে পরিবারের প্রতি তিনি ছিলেন কর্তব্যপরায়ণ। কখনও গৃহত্যাগী হয়ে সন্ন্যাসী হয়ে যাননি। শোনা যায়, ১৭৮৭-র বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাটির কালীমূর্তি গঙ্গায় বিসর্জন দিয়ে তিনি নিজেও গঙ্গায় বিলীন হয়ে যান।

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

Sukanta Majumdar live: কালনায় সদস্যতা অভিযানে সুকান্ত, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
সিবিআই এতদিন ধরে কী করছে? সঞ্জয় রায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর প্রশ্ন কিঞ্জল নন্দের | Kinjal Nanda
'পাথর নিয়ে হামলাকারীদের জন্নত নয়, জাহান্নামে পাঠিয়েছি' বিস্ফোরক যোগী আদিত্যনাথ | Yogi Aditiyanath
Virat Kohli: ৫০ ফুটের বিরাট! কোহলির ৩৬ তম জন্মদিন পালনে সাঁতরাগাছিতে মহোৎসব! | Howrah News Today
ঠাকুর দেখার নাম করে যুবতীর সঙ্গে কুকর্ম! আতঙ্ক নরেন্দ্রপুরে! | South 24 Parganas News Today