সব কটি জেলার মূল দাবি গ্রামীণ রাস্তার হাল ফেরানো, পরিশ্রুত পানীয় জল, পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমানো, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান, সেচ কাঠামোর উন্নয়ন, একশো দিনের কাজ বা বিকল্প কাজের ব্যাবস্থা করা, আবাস যোজনায় বাড়ি অনুমোদন ও বোমা -বন্দুক উদ্ধারে জোর।
রক্তপাত, প্রাণহানি, বন্দুক, গুলি আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভারী বুটের শব্দ। সেসব ছাপিয়েই শনিবার ৮ই জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে আসুন একবার চোখ বুলিয়ে নিই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কি চাইছেন আম জনতা। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কোন কোন সমস্যার দিকে জোর দিয়ে ভোট চেয়েছেন আর মানুষ কী চাইছে। জেলা ভিত্তিক দাবিগুলি রইল এই প্রতিবেদনে।
রাজ্যে মোট ৪৮৬৪৯ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। ৯২১৭ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। জেলা পরিষদের সদস্য রয়েছেন ৮২৫ জন। ২০টি জেলার তিন স্তরের পঞ্চায়েত এবং দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় দ্বি-স্তরীয় পঞ্চায়েতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বাংলায় ব্যাপক হিংসায় সময় প্রায় ২০ জন নিহত হয়েছিল।
সব কটি জেলার মূল দাবি গ্রামীণ রাস্তার হাল ফেরানো, পরিশ্রুত পানীয় জল, পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমানো, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান, সেচ কাঠামোর উন্নয়ন, একশো দিনের কাজ বা বিকল্প কাজের ব্যাবস্থা করা, আবাস যোজনায় বাড়ি অনুমোদন ও বোমা -বন্দুক উদ্ধারে জোর। এবার দেখে নেওয়া যাক জেলাভিত্তিক দাবি কী। অর্থাৎ বিভিন্ন জেলার মানুষ কি আশা করেন তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের থেকে।
আলিপুরদুয়ার
পানীয় জলের সমস্যার সমাধান, ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে জেলায় প্লাবনের সমাধান, চা বাগানে হাসপাতাল তৈরির মতো দাবি জানিয়েছেন এই জেলার মানুষ।
কোচবিহার
দিনহাটা সহ গোটা জেলায় শান্তির পরিবেশ বজায় রাখাই মূল দাবি স্থানীয়দের। পাট ও তামাক শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আলু-ধানের জবরদস্তি বিক্রির ওপর কড়া নজরদারি।
দার্জিলিং ও কালিম্পং
চা বাগানের শ্রমিকদের জমির অধিকার, কৃষি পাট্টার দাবি, বিভিন্ন ব্লক ভেঙে ছোট ব্লক তৈরি করে পরিষেবা বাড়ানোর দাবি করেছেন এই জেলার মানুষ। গ্রামীণ স্তরে হোম স্টে বা হোটেল ব্যবসার সম্প্রসারণের দাবি রয়েছে মানুষের মধ্যে।
জলপাইগুড়ি
প্রতি বছর এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি চাইছেন মানুষ। কৃষিভিত্তিক শিল্প বা চাবাগানে আরও সুসংহত কর্মসংস্থানের দাবি রয়েছে।
মুর্শিদাবাদ
মুর্শিদাবাদের মানুষের দাবি দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে উঠুক।
মালদহ
আম প্রক্রিয়াকরণ ভিত্তিক শিল্পের সম্প্রসারণ চাইছে এই জেলার মানুষ।
দক্ষিণ দিনাজপুর
এই জেলার মানুষের একটাই দাবি, তা হল আত্রেয়ী নদীর সংস্কার।
উত্তর দিনাজপুর
আনারস সহ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের প্রসার থেকে চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবি করছে জেলার মানুষ।
বীরভূম
কর্মসংস্থানের অভাব পূরণ হোক। গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলির শিক্ষকের অভাব পূরণ করা হোক।
পশ্চিম বর্ধমান
এই জেলার ধ্বস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের সঠিক পুনর্বাসন ও কারখানার দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
পূর্ব বর্ধমান
এই জেলার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরানো হোক, চাইছেন মানুষ।
ঝাড়গ্রাম
ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি এলাকায় জলের সমস্যা মেটাতে হবে ও শবরদের জন্য পাকা ছাদের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে দাবি।
পুরুলিয়া
এই জেলার কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবি উঠেছে।
বাঁকুড়া
বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতাদের মধ্যে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
উত্তর ২৪ পরগনা
যশোর রোড সম্প্রসারণের দাবি থেকে নদী ও খালের সংস্কারের দাবি তুলেছেন জেলার মানুষ।
দক্ষিণ ২৪ পরগণা
সুন্দরবন জুড়ে কংক্রিটের বাঁধ তৈরির দাবি উঠেছে। গ্রন্থাগারগুলির বেহাল পরিস্থিতি ঠিক করা হোক।
নদিয়া
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় উন্নততর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা করার দাবি রয়েছে এই জেলার।
হাওড়া
নিকাশির সমস্যার সমাধান করা হোক। এলাকায় ছিনতাই রুখতে বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি করা হোক। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জোর।
হুগলি
বিভিন্ন পরিষেবার ওপরে জোর, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার দাবি।
পশ্চিম মেদিনীপুর
অর্থ কমিশনের বরাদ্দ সময়ে খরচ করতে পারেনি জেলা পরিষদ। এবার সেই সমস্যার সমাধানের দাবি উঠেছে।
পূর্ব মেদিনীপুর
হলদিয়া শিল্পাঞ্চল, কোলাঘাট তাপবিদ্যুত কেন্দ্র ও তাজপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে কাজে দাবি।