অধীর ঘনিষ্ট জাকির হোসেন তৃণমূলে আসেন শুভেন্দুর হাত ধরে, জানুন রাজনীতিতে বিড়ি শিল্পপতির উত্থানের কাহিনি

মুর্শিদাবাদের রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যবসা- সর্বত্রই গুরুত্বপূর্ণ নাম জাকির হোসেন। প্রণব মুখোপাধ্যায়, অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ট ছিলেন তিনি। ভাগ্য বদলে যায় ২০০৪ সালে।

 

Web Desk - ANB | Published : Jan 12, 2023 11:19 AM IST

রাজ্য রাজনীতি আবারও চর্চায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাকির হোসেন। তাঁর বাড়ি থেকে আয়কর দফতর দীর্ঘ তল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। তাঁর অফিস গুদাম, কারখানা আর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি নগদ টাকা। আয়কর দফতর সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়ার টাকার কোনও হিসেব পাওয়া যায়নি- অর্থাৎ হিসেব বহির্ভূত টাকা পাওয়া গেছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। কিন্তু কে এই জাকির হোসেন? কীভাবেই বা তিনি এলেন তৃণমূল কংগ্রেসে?

ব্যবসায়ী জাকির হোসেন-

একটা সময় শুধু ব্যবহাসীয় হিসেবে পরিচিত ছিলেন জাকির হোসেন। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। রাজ্যের বিড়ি শিল্পপতিদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। একদিকে বিড়ি শিল্প অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চালকল- সবক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন প্রথম সারিতে। সুতি এলাকায় তাঁর বিশাল বাড়ি যে কোনও মানুষেরই নজর কাড়বে। সুতির ঔরাঙ্গাবাদের বাড়িতেই রয়েছে তাঁর বিড়ি কারখানা। এদিন তাঁর বাড়িতে আয়কর দফতরের টাকা উদ্ধারের পর তিনি নিজে জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে যেসব বিড়ি শিল্পপতি রয়েছেন তাদের মধ্যে তিনি সবথেকে বেশি আয়কর দেন। একাধিল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জারিক হোসেনের নাম।

কংগ্রেস ঘনিষ্ট

২০০৪ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র তেকে জয়ী হয়ে সংসদ হয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে সুদৃঢ়় সম্পর্ক তৈরি করেন জাকির হোসেন। জেলার কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। তখনও সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হননি জাকির হোসেন। কিন্তু সেই সময় থেকেই তিনি ক্ষমতার অন্দরে প্রবেশ করেছিলেন। জেলার রাজনীতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থেকে তাঁর ক্ষমতা কোনও অংশ কম ছিল না।

তৃণমূলে প্রবেশ

২০০৪-১৫ একই ভাবে চলছিল জাকির হোসেনের। এক দিকে ব্যবসা, আর অন্যদিকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠাবসা। কিন্তু ২০১৫ সালে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেন জাকির হোসেন। নাম লেখান ঘাসফুল শিবিরে। সেই সময় মুর্শিদাবাদ জেলার দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। বলা যেতে পারে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই তৃণমূলের অন্দরে পা রাখেন তিনি। মাত্র এক বছরের মধ্যেই বিধায়ক হন।

তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন

যে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিলে সেই কংগ্রেসের বিধায়ক মহম্মদ সোহরাবকে হারিয়েই বিধানসভায় পা রাখেন জাকির হোসেন। ২০১৬ সালে জঙ্গিপুরের বিধায়ক হন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে হলফনামায় ২৭ কোটি টাকার সম্পত্তির হিসেব দেন তিনি।

মন্ত্রী জাকির হোসেন

প্রথমবার বিধায়ক হয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুনজরে পড়েন তিনি। মন্ত্রী হন জাকির হোসেন। তাঁকে শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পরের নির্বাচনের ভাগ্য বিপর্যয়।

জিতলেও বোমার আঘাত পান জাকির

২০২১ সালের নির্বাচনের আগে নিমতিতা স্টেশনে কলকাতাগামী ট্রেনে ওয়ার সময়ই বোমার আঘাতে গুরুতর জখন হন জাকির হোসেন। ডান পায়ে গুরুতর আঘাত পান। তাঁর ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে নামে এনআইএ। কিন্তু এখনও অভিযুক্তরা ধরা পড়েনি। যা নিয়ে ঘটিষ্ট মহলে আক্ষেপ রয়েছে জাকিরের। বোমার আঘাতে জখম পা নিয়েই ২০২১ সালে জঙ্গিপুর বিধানসভা থেকে জয়ী হন। নিজে সুতির বাসিন্দা হলেও জঙ্গিপুরই হয়ে যায় তাঁর রাজনৈতিককর্মক্ষেত্র। কিন্তু কোভিড ও বাম প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে জঙ্গিপুরের ভোট হয় অনেক দেরীতে। সেইকারণে এবার তিনি আর মন্ত্রী হতে পারেননি। বিধায়ক হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি রাজনীতি বা ব্যবসার থেকে অনেক বেশি চিন্তু নিজের পা নিয়ে। চিকিৎসার জন্য তিনি জার্মানিও যেতে পারেন। তবে সবই এখন নির্ভর করছে আয়কর দফতরের ওপর।

আরও পড়ুনঃ

সেলস ট্যাক্স নিয়ে অভিযোগ, সরাসরি বোম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা

আরও কনকনে ঠান্ডার পূর্বাভাস দিলেন আবহাওয়া বিজ্ঞানী, দেশের সমভূমির তাপমাত্রা নেমে যাবে হিমাঙ্কের নিচে

তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা! ব্যবসায়ীর বাড়িতে তো টাকা থাকবেই, সাফাই জাকির হোসেনের

Share this article
click me!