প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরেই রাজ্য়ে সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভার পর রীতিমত ঘুরে দাঁড়িয়েছে এই রাজ্যে।
ভোটের প্রচার থেকে শুরু করে মিছিল - মিটিং- সবেই প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। কিন্তু ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন হয় না। গত বিধানসভা , লোকসভা নির্বাচনের পর এবারও একই জিনিস হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল সিপিআই(এম)এর সঙ্গে। এবার রাজ্য সিপিআই(এম) তরুণ তুর্কীদের ওপরই আস্থা রেখেছিল। কিন্তু তাতেও সাফল্যের ভাঁড়ার শূন্য। দলের এই বিপর্যয় কাঁটা ছেঁড়া করতে দলের সদর দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকে বলেছিলেন সিপিআই(এম) নেতারা। সেখানেই দাবি উঠেছে সাফল্যের জন্য আর সংগঠনের ওপর নির্ভর করা যাবে না। এবার সাফল্যের জন্য চাই প্রকাশন্ত কিশোর বা সুলীন কানুগোলুর মত কোনও ভোট কুশলীর। যার হাতে নিয়ন্ত্রণ থাকবে দলের নিচ থেকে ওপর সব মহলের। পাশাপাশি নির্বাচনী কৌশল থেকে শুরু করে জোট- সবই ঠিক করে দেবে সেই ভোট কুশলী।
প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরেই রাজ্য়ে সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভার পর রীতিমত ঘুরে দাঁড়িয়েছে এই রাজ্যে। যদিও বর্তমানে প্রশান্ত কিশোর নিজের সংস্থা আই-প্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছেন। কিন্তু তৃণমূল আই-প্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ অটুট রেখেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের নির্বাচনী বিপর্যয় অনেকটাই ঠেকিয়ে দিয়েছেন আই-প্যাকের প্রাক্তনী সুনীল কানুগোলু। কর্ণাটকে সাফল্যের পিছেন তাঁর হাত ছিল। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রাও মাস্টার মাইন্ড ছিলেন তিনি। যাইহোক এরকমই কোনও ভোট কুশলীকে দিয়ে ভোট করানোর আওয়াজ উঠেছে সিপিআই(এম)এর অন্দরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এর সিপিআই(এম) নেতা জানিয়েছেন, দলের নেতা, কর্মী ও প্রার্থীরা পরিশ্রম করতে পিছপা হননি। তারপরেও একটি মাত্র আসনেও জয় পায়নি দল। এটি অত্যান্ত হতাশাজনক ছবি। তিনি আরও বলেছেন, চলতি লোকসভা নির্বাচনে যে কটি দল সাফল্য পেয়েছে সবই পেশাদার সংস্থার সাহায্য নিয়েছে। তাই সময়ের বাস্তবতা মেনে দলকেও সেই পথে হাঁটতে হবে।
যদিও সিপিআই-এর রাজ্য সম্পাদক পেশাদার সংস্থা বা ভোট কুশলী নিয়োগের প্রশ্ন জল ঢেলে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তিনি জানিয়েছেন, এখন দলের যা অবস্থা তাতে পেশাদার সংস্থা বা ভোট কুশলী নিয়োগ করা আর সেই খরচ বহন করা সম্ভব নয়। কিন্তু দলের পেশাদারিত্ব বাড়াতে হবে। তবে কী করে দলের পেশাদারিত্ব বাড়ানো যাবে তার কোনও উত্তর নেই সেলিমের কাছে। চলতি নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন তিনি। প্রথম দিকে এগিয়ে থাকলেও পরে হেরে যান। অন্যদিকে এবার নির্বাচনে আইএসএফ তিনটি আসনে সিপিআই(এম)কে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। সব মিলিয়েই হতাশা বাড়ছে দলের অন্দরে। এই নিয়ে টানা তিনটি নির্বাচনে একটিও আসন পায়নি সিপিআই(এম)। সংসদীয় রাজনীতি থাকা একটি দল যদি পরপর একটি আসন দখল করতে না পারে তাহলে সেই দলের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সিপিআই(এম)এর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি।