বেপরোয়া বাইক চালানোর প্রতিবাদ, আদিবাসী শিক্ষককে পিটিয়ে মারল যুবকের দল

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বুধবার সকালে সুমন ভুঁইয়া, অর্ঘ্য ভুঁইয়া, ও রবি ভূঁইয়া নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়৷ এরপর এলাকায় খবর আসে মেদিনীপুরে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে শিক্ষক লক্ষীরাম টুডুর৷

Web Desk - ANB | Published : Mar 19, 2023 5:05 PM IST

সোমবার, ১৪ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শ্রীরামপুর গ্রামে এক আদিবাসী স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার সন্ধ্যায় দ্রুত গতিতে কেনো বাইক চালাচ্ছিল যুবক। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ওই যুবককে এক চড় মারেন এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষক লক্ষীরাম টুডু। তারপরেই ওই ব্যাক্তির ওপর লোকজন নিয়ে চড়াও হয় ওই যুবক। তারপর শুরু হয় শিক্ষকের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি।আর সেই মারামারিতেই আহত হয় লক্ষীরাম টুডু। আহত হয় অপর পক্ষের এক যুবকও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বুধবার সকালে সুমন ভুঁইয়া, অর্ঘ্য ভুঁইয়া, ও রবি ভূঁইয়া নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়৷ এরপর এলাকায় খবর আসে মেদিনীপুরে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে শিক্ষক লক্ষীরাম টুডুর৷ আর তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় সূত্রের খবর মৃত শিক্ষক এলাকার একজন জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন। এরইসঙ্গে তিনি একজন বাম সমর্থকও ছিলেন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এর প্রাক্তন শাখা সম্পাদক ছিলেন।

Latest Videos

ঘটনার পর গ্রামবাসী জড়ো হয়ে অভিযুক্ত দুই হামলাকারীকে ধরে ফেলে এবং অন্য দুইজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা পরে দুর্বৃত্তদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানা গেছে। গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ না করা পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্ত প্রধান অভিযুক্ত রবি ভুইয়াকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান যে জনগণের বিক্ষোভের কারণে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “যদি কোনো বিক্ষোভ না হতো, তাহলে পুলিশ দর্শক হয়েই থাকতো। বুধবার মৃতদেহ এলাকায় পৌঁছলে ডেবরাতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আদিবাসীদের সংগঠন ভারত যাকাত মাঝি পারগানা মহল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে জাতীয় সড়ক। ক্ষুব্ধ আদিবাসীরা ওই এলাকায় অভিযুক্তদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ। উত্তেজনা বাড়লে বাড়ানো হয় পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশ কর্মীর সংখ্যাও।

জানা গিয়েছে লক্ষ্মীরাম টুডুর আগামী মাসে জালালচক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল। তিনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার ছেলে রাজীব টুডু ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং ঘটনার দিন তার বাড়িতে থাকার কথা ছিল। তবে ওই দিন এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। খবর পেয়ে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে ছুটে যান এবং আহত বাবাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। রাজীব সাংবাদিকদের বলেন, তার স্ত্রী তার বাবাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও দুর্বৃত্তরা তাকেও মারধর করে। স্থানীয়রা দুষ্কৃতীদের প্রতিহত করতে শুরু করলে প্রধান অভিযুক্ত এবং অন্য দুইজন বাইকে করে পালিয়ে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ ও RAF মোতায়েন করতে হয়। প্রায় দুই হাজার মানুষ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলেই বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন যে মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এবং পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। হত্যার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে স্বীকার করেন সরকার।

আদিবাসী অধিকার রক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক পুলিন বিহারী বাস্কে বলেন সংগঠনের একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিদল শুক্রবার এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে দেখা করেন।

Share this article
click me!

Latest Videos

'চোর-চোর' তৃণমূলের পতাকা দেখেই জ্বলে উঠলেন শুভেন্দু! কি হল দেখুন | Suvendu Adhikari on TMC |
মহিলাদের সুরক্ষায় ‘অভয়া প্লাস’! রাজ্যপালের ২ বছর পূর্তিতে ৯টি প্রকল্পের সুভারম্ভ | CV Anand Bose
ভাইদের জন্য সত্য নারায়ণ মিষ্টান্নে নতুন মিষ্টির ভাণ্ডার! Singur-এ ভাই ফোঁটায় উপচে পড়া ভিড়
'ওদের টার্গেট মহিলা আর হিন্দু' তৃণমূল বিধায়কদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
Weather Update : কবে থেকে জাঁকিয়ে শীত বাংলায়? দেখুন কী বললেন হাওয়া অফিস