শুভেন্দু লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই স্কিমটিকে সবসময় নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। এবার তাদের প্রকাশ করে দেওয়ার সময় এসেছে।”
ভারতে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল স্কিমের নাম পরিবর্তন করে ২০২১ সাল থেকে রাখা হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল ক্যাবিনেট। কেন্দ্র সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ থেকে আগামী ২০২৫-২৬, অর্থাৎ মোট পাঁচ বছরের জন্য ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে মিড ডে মিল (‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ’) প্রকল্পটির জন্য। উল্লেখ্য, এই বরাদ্দ হওয়া এক লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৫৪,০৬১.৭৩ কোটি টাকা। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি দেবে ৩১,৭৩৩.১৭ কোটি টাকা। এছাড়াও ৪৫ হাজার কোটি টাকার খাদ্যশস্যের অতিরিক্ত খরচ বহন করবে কেন্দ্র, এমনই সিদ্ধান্তে সহমত হয়েছিল ক্যাবিনেট।
প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ (PM POSHAN) প্রকল্পের আওতায় পড়েছে প্রায় ১১ কোটি ৮০ লক্ষ শিশু। সারা দেশের মোট ১১.২০ লক্ষ স্কুল এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী দফতর সূত্রে জানা গেছে। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি ও সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত সমস্ত স্কুলের পড়ুয়ারা প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পটি নিয়েই এবার মারাত্মক অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিধানসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শনিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া আ্যাকাউন্ট-এ একটি বিজ্ঞপ্তির ছবি পোস্ট করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সেই নোটিসে দেখা যায়, কেন্দ্রের যৌথ পর্যালোচনা মিশনের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যেখানে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পুষ্টি বিশেষজ্ঞ এবং উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা নিজে উপস্থিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ’ স্কিমের সঠিক বাস্তবায়ন সম্পর্কে খোঁজ নেবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে যে, বাংলার প্রতিটি জেলায় জেলায় ঘুরে একেবারে ব্লক স্তরের স্কুলগুলি পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন মানের খাদ্যদ্রব্য স্কুলগুলির উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে, মিল রান্না করার ঘরগুলি ঠিকঠাক পরিষ্কার রয়েছে কিনা, রান্নাঘরে প্রয়োজনীয় বাসনপত্র রয়েছে কিনা, লোকসভার সিনিয়র সাংসদের সভাপতিত্বে জেলা পর্যায়ের কমিটির যথাযথ আলোচনা হচ্ছে কিনা, ইত্যাদি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবে এই কেন্দ্রীয় কমিটি।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দেওয়া এই বিজ্ঞপ্তিটি টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, “কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রককে আমি স্বাগত জানাই কেন্দ্রের স্পনসর করা স্কিম প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ (PM POSHAN)-এর বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করার জন্য একটি যৌথ পর্যালোচনা মিশন গঠনের সিদ্ধান্তের জন্য। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই স্কিমটিকে সবসময় নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। এবার তাদের প্রকাশ করে দেওয়ার সময় এসেছে।”
বলাবাহুল্য, পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। শাসক পক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের অস্ত্র শানাচ্ছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এই পরিস্থিতি বিরোধী দলনেতার এই মারাত্মক অভিযোগের জেরে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর আরও জোরালো হল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন-
বিরোধীদের দাবি ধোপে টিকবে না: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নিশ্চয়তা দিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর
দুটি নয়, আপাতত বিজেপির একটি জনসভাতেই অংশ নিচ্ছেন জেপি নাড্ডা, ১৯ জানুয়ারি তাঁর বঙ্গ সফর