অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাতে পারছেন না। বাধ্য় হয়ে ছেলের সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন মা। দুর্গাপুর ৮ নং ওয়ার্ডের স্টিল টাউনশিপের এই ঘটনায় নাড়িয়ে দিয়েছে সমাজ ব্য়বস্থাকে।
মা হয়ে ছেলের কষ্ট আর সইতে পারছেন না। বার বার লোকের দুয়ারে গিয়েও কাজ হচ্ছে না। উদ্য়মে বাধা দিচ্ছে ৬৬ বছরের অসহায় শরীর। শেষমেশ স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি লিখেছেন প্রবীণ নাগরিক বন্দনা সাঁপুই। চিঠিতে বন্দনা দেবী জানিয়েছেন, তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। স্বামী দুর্গাপুর অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর থেকে সংসারে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ইতিমধ্য়েই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই তাঁর।
প্রবীণা জানান, ছেলে তুষারকান্তি সাঁপুই-এর বয়স এখন ৪৩ বছর। ২ বছর আগে হঠাৎই সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসা করিয়ে জানতে পারেন,ছেলের দুটো কিডনিতেই সমস্যা হয়েছে। যার জেরে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যায় সে। এখন ডাইলেসিস চালিয়ে কোনও রকমে বেঁচে আছে। দু-বছর তার চিকিৎসা করাতে গিয় সর্বসান্ত হতে হয়েছে তাঁকে। সরকারি হাসপাতালে ডাইলেসিসের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালের অতিরিক্ত খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে তাঁর পক্ষে। সেকারণে মঙ্গলবার ছেলের জন্মদিনে দুজনেরই স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জির আবেদন জানিয়েছেন মহকুমা শাসকের কাছে।
বন্দনাদেবী বলেন, ছেলের এই কষ্ট আমি মা হয়ে আর সহ্য করতে পারছি না। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের পরিষেবা পেতে আমি ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় এবং এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছেও গিয়েছিলাম। তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বয়সের কারণে আমি সেই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হই।
এই বিষয়ে ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।' স্থানীয় কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড না হলেও ওনার ছেলের চিকিৎসার বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। সরকারি হাসপাতালে যাতে সবরকম সুবিধা পাওয়া যায় সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।