অনুব্রতর হুমকির জের, বীরভূমে জনরোষের মুখে ইন্টারনেট সাথী-রা

 

  • এনআরসি নিয়ে গুজব বীরভূমে
  • হামলার মুখে ইন্টারনেট সাথীরা
  • এনআরসি-র জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে সন্দেহ
  • পুলিশের সামনেই হামলার অভিযোগ

debamoy ghosh | Published : Jan 24, 2020 7:12 PM IST

একের পর এক গ্রামে বিক্ষোভের জেরে আতঙ্কিত ইন্টারনেট সাথীরা। কেউ গৃহবন্দি আবার কেউ কেউ গ্রাম ছাড়া। কারও বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের সামনেই। পুলিশি আশ্বাসেও তাই আর ভরসা পাচ্ছেন না গ্রামের  ইন্টারনেট সাথীরা। ফলে অনেকেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এনআরসি এবং সিএএ-এর বিরোধিতা করে ব্লকে ব্লকে সভা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই সমস্ত সভায় তিনি নির্দেশ দেন, 'কেউ সার্ভে করতে গেলে ঝাঁটা মারবেন, কাককেযেমন ভাবে ঢিল ছুড়ে মারেন সেভাবে মারবেন।' এর পরেই রামপুরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে ‘ইন্টারনেট সাথী’ হিসেবে কর্মরত মহিলাদের বাড়িতে বিক্ষোভ শুরু হয়। নলহাটি ১ ও ২ এবং মুরারই ১ ও ২ নম্বর ব্লকে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপরেই সেই আঁচ পরে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে। 

গৌরবাজার গ্রামে ইন্টারনেট সাথী এক মহিলার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বাড়ির সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আতঙ্কিত ওই পরিবারটি এখনও গ্রামে ঢুকতে পারেনি। এর পর কানাচি গ্রামে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই গ্রামের ইন্টারনেট সাথীসাহেনি সুলতানা বলেন, 'পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্য আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। পরে পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠায়। তবুও আমি আতঙ্কে রয়েছি। এখনও গ্রামের মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। পুলিশ কেন আমাদের ধরে নিয়ে গেল না সেই প্রশ্ন তুলছে। হামলার আতঙ্ক রয়েছে। ওরা ভাবছে আমরা এনআরসি- র কাজ করছি। কিন্তু আমরা এনআরসির কাজ করছি না। শুধুমাত্র গ্রামের ১৫ থেকে ৬৫ বছরের মহিলাদের ইন্টারনেট ও মোবাইল চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর নাম, ঠিকানা এবং ছবি সংগ্রহ করি।'

গ্রামের বাসিন্দা সেবিনা বিবি বলেন, 'গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। ভাবছে এই সব তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেবে। তবে পুলিশ ও বিডিও এসে অনেক বুঝিয়েছেন। এটা যে এনআরসি- র কাজ নয় মানুষকে তা বোঝানো হয়েছে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গোরাচাঁদ বর্মণ বলেন, 'একটা গুজব ছড়িয়েছে। আমরা মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি এনআরসি- র কাজ চলছে না। কাজ করছে ইন্টারনেট সাথীর মহিলারা। তাঁদের আপাতত কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর হলে তবেই কাজ শুরু করতে পারবেন।'
 

Share this article
click me!