সংক্ষিপ্ত
- সেমিফাইনালে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল ভারত
- প্রায় একার হাতেই দলকে জিতিয়ে দিচ্ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা
- শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করতে পারেননি
- তবে এই পারফরম্য়ান্সের পর সীমিত ওভারের দলে তাঁরর জায়গা পাকা হওয়ার কথা
ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম দুইদিন ধরে চলা সেমিফাইনাল খেলার শেষে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ১৮ রানে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে ভারতকে। বলা যায় তীরে এসে তরী ডুবেছে। কিন্তু ভারত যে ম্য়াচটাকে এতখানি কাছাকাছি আনতে পারবে, তা এই দিন ভারতের ইনিংসের শুরুর দিকে বা মাঝামাঝি সময়ে মনেই হয়নি। এর পিছনে রয়েছে একজনেরই হাত, তিনি রবীন্দ্র জাদেজা।
কিউই বোলারদের দাপটে ৫ রানের মধ্যেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন ভারতের প্রথম তিন ব্য়াটসম্য়ান - রোহিত, কোহলি ও রাহুল। আর এঁরা আউট হলেই ভারতের ব্যাটিং-এর কেল্লাফতে - এটা এতদিনে সব প্রতিপক্ষই জানে। কিন্তু এদিন ভারত ৮ জন ব্যাটসম্যান নিয়ে নেমেছিল।
দীনেশ কার্তিকের কিছুক্ষণের মাথা ধরানো ব্যাটিং-এর (২৪ বল খেলে করেন ৬) পর হাল ধরেছিলেন দুই তরুণ হার্দিক ও পন্থ। কিন্তু দুজনেই জানান দিলেন, এখনও তাঁরা ঠিক পাকেননি। জাদেজা যখন ক্রিজে আসেন ৩০.২ ওভারে ৯০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত। সেখান থেকে তিনি ধোনির সঙ্গে জুটি বেঁধে ১১৬ রান জুড়লেন। প্রচন্ড চাপের মুখে একেবারে স্বাভাবিক থেকে, ৪টি ছয় ও ৪টি চার মেরে মাত্র ৫৯ বলে ৭৭ রান করে গেলেন।
আরও পড়ুন - ম্যাঞ্চেস্টারে জাদেজার অসি চালনা! ইলিয়ট হতে কি পারবেন
আরও পড়ুন - জাদেজাই ভুল প্রমাণ করে দিলেন! নাম না করেই শাস্ত্রীকে ঠুকলেন দাদা
আরও পড়ুন - বন্ধ করুন মৌখিক ডায়েরিয়া! মঞ্জরেকরকে তীব্র আক্রমণ স্যার জাদেজার
এখানেই শেষ নয়, মঙ্গলবারই ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। বুধবার ২৩ বলের বাকি নিউজিল্যান্ড ইনিংসে একটি দুরন্ত থ্রো-তে রান আউট করেছেন কিউইদের সর্বোচ্চ রান করা রস টেলরকে। আবার ভুবির বলে বাউন্ডারি লাইনে দারুণ ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন টন ল্যাথামকে। শুধু এই দিনই নয়, মাত্র দুটি ম্য়াচ খেলে এবং বাকি কয়েকচি ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে খেলে আপাতত টুর্নামেন্টে তিনিই সবচেয়ে বেশি রান বাঁচানো ফিল্ডার।
অথচ বিশ্বকাপের শুরুর দিকে জাদেজাকে খেলানোই হয়নি। গ্রুপের একেবারে শেষ ম্যাচে এসে সুযোগ দেওয়া হয়। আরেকটু পিছনে যদি যাওয়া যায়, ভারতের আসল বিশ্বকাপ পরিকল্পনাতে জাদেজা ছিলেনই না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও প্রথমে নেওয়া হয়নি। চোটের জন্য হার্দিক না খেলায় শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়েছিল। তারপর চতুর্থ কোনও পেসার ভাল না করায় দলে জায়গা হয়।
দল বাছাইয়ের সময় থ্রিডি ক্রিকেটার কথাটি দারুণ সাড়া ফেলেছিল। বিজয় শঙ্করকে থ্রিডি ক্রিকেটার বা ত্রিমাত্রিক ক্রিকেটার হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন নির্বাচক প্রধান প্রসাদ। অর্থাৎ ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং - তিন বিভাগেই যিনি পারদর্শী। বিজয় শঙ্কর চোট পেয়ে বহুদিন আগেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বিশ্বকাপের শেষ লগ্নে সুযোগ পেয়ে জাদেজা কিন্তু বুঝিয়ে দিলেন এই দলে প্রকৃত থ্রিডি ক্রিকেটারটি কে।
সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পাহাড় প্রমাণ হতাশার মধ্যে ভারতীয় দল একমাত্র জাদেজা নামক এই ইতিবাচক দিকটা গ্রহণ করতে পারে। এই দিনের ইনিংস-এর পর, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলে তাঁর জায়গা পাকা হওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকা উচিত নয়।