সংক্ষিপ্ত
অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিপক্ষে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এর (T20 World Cup 2021) সেমিফাইনালের আগে দু'রাত আইসিইউতে ছিলেন পাকিস্তানের (Pakistan) মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan)। তাঁকে সুস্থ করে তুলেছিলেন এক ভারতীয় ডাক্তার।
শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিপক্ষে সেমিফাইনালে হেরে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এর (T20 World Cup 2021) ফাইনালে ওঠা হয়নি পাকিস্তানের (Pakistan)। তবে, পাকিস্তান এবং বাকি ক্রিকেট বিশ্বে 'ওয়ারিয়র' বা যোদ্ধা হিসাবে সম্মান পাচ্ছেন পাক উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan)। ম্যাচের আগে দু'রাত আইসিইউতে কাটিয়ে, পরের দিন পাকিস্তানের প্রথম একাদশে জায়গা শুধু করে নেননি, ৫২ বলে ৬৭ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংসও খেলেছিলেন। তবে অনেকেরই জানা নেই, তাঁকে সুস্থ করে তোলার কারিগর ছিলেন এক ভারতীয় ডাক্তার। তবে তিনিও রিজের ইচ্ছাশক্তি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন।
ওই ভারতীয় ডাক্তারের নাম সাহির সাইনালাবদিন (Saheer Sainalabdeen)। তিনিই আইসিইউ-তে রিজওযানের চিকিৎসা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, আইসিইউ-এর ডাক্তারদের রিজওয়ান, 'আমি খেলতে চাই, দলের সাথে থাকতে চাই', বলে বলে পাগল করে দিয়েছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ নকআউট ম্যাচটিতে দেশের হয়ে খেলার প্রবল ইচ্ছা ছিল রিজওয়ানের। তাঁর দৃঢ়প্রতিজ্ঞা এবং আত্মবিশ্বাসের জোরেই অত্যন্ত দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। যে গতিতে রিজ সুস্থ হয়েছিলেন তাতে চিকিৎসকরাও চমকে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন - T20 WC 2021, Final - ক্লিনিকাল নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি ফর্মের শীর্ষে ওঠা অস্ট্রেলিয়া
আরও পড়ুন - T20 WC 2021, Final: মুখোমুখি দুই ছোটবেলার বন্ধু - একজন পরবেন কালো জার্সি, অন্যজন হলুদ
ডাক্তার সাহির জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে রিজওয়ান ৩-৪ দিন ধরে ক্রমাগত জ্বর, কাশি এবং বুকে ব্যথায় ভুগছিলেন। হাসপাকালে ভর্তি হওয়ার পর মেডিকেল টিম প্রথমেই তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করে। তাঁকে ব্যথা কমার ওষুধ দেওয়া হয়। ব্যথা কমলে পরে তাঁর বিশদ মূল্যায়নের করা হয়েছিলব। চিকিৎসাগত পরীক্ষার ফলাফলগুলি থেকে জানা গিয়েছিল, তিনি ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণে ভুগছেন। এর থেকে খাদ্যনালীতে খিঁচুনি এবং ব্রঙ্কোস্পাজম হতে পারে। এর ফলে তীব্র বুকে ব্যথার অনুভুত হতে পারে যা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
এরপরই মেডিকেল টিম ২৯ বছর বয়সী ক্রিকেটারকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করেছিল। তাঁকে সেখানে ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। ডাক্তার সাহির আরও জানিয়েছেন, রিজওয়ানের সংক্রমণ এতটাই মারাত্মক ছিল যে, সেমিফাইনালের আগে তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠা এবং পুরোপুরি ফিট হওয়া একেবারেই অবাস্তব বিষয় বলে মনে করেছিলেন ডাক্তাররা। এই ধরণের সংক্রমণে অন্য যে কারোর সুস্থ হতে সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। তবে, রিজওয়ানের ক্ষেত্রে সময় লেগেছিল মাত্র ২দিন।
একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে তার শারীরিক সুস্থতা এবং সহনশীলতার মাত্রা তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তবে ডাক্তাররা মনে করছেন, তাঁর নিষ্ঠা, মনের জোর, আত্মবিশ্বাস এবং ঈশ্বরভক্তিই তাঁর এই দ্রুত আরোগ্যের অন্যতম প্রধান কারণ। বুধবার দুপুরে রিজওয়ানকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কৃতজ্ঞ রিজওয়ান ডাক্তার সাহির এবং মেডিকেল টিমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সাহিরকে একটি নিজের স্বাক্ষর করা জার্সিও উপহার দিয়েছেন।