সংক্ষিপ্ত
ঠিক কেন আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন জনপ্রিয় গায়ক কেকে? তা নিয়ে এখন মতবিরোধের শেষ নেই। তবে চিকিৎসকদের অনুমান, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন কেকে এবং তার থেকেই হার্টব্লক হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। তবে কেন হার্টের সমস্যার কথা বুঝতে পারলেন না কেকে? তিনি কি ভাবছিলেন অ্যাসিডিটির সমস্যা হচ্ছে?
সোমবার এবং মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে পরপর দুটি লাইভ কনসার্টে এসেছিলেন কেকে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের শো- এর আর ঘরে ফেরা হল না তাঁর, অনুষ্ঠানের মাঝেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি, এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হৃদরোগজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে শিল্পীর। কিন্তু ঠিক কী কারণে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলেন তিনি, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। হঠাৎ গান করতে এহেন দুর্ঘটনায় হতবাক হয়েছেন অনেকেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদ্রোগের পিছনে থাকতে পারে একাধিক 'রিস্ক ফ্যাক্টর'। জানা গেছে যে বাম করোনারি ধমনীর নাকি ৮০ শতাংশই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। শুধু তাই নয় শরীরের ধমনীও নাকি প্রায় ব্লকই ছিল কেকে- র। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলেন না গায়ক? তা কী করে সম্ভব? কেকে- র পরিবার সূত্রে জানা গেছে যে, দীর্ঘদিন ধরেই অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগছিলেন কেকে। নিয়মিত খেতেন অ্যাসিডিটির ওষুধও। তাহলে কি হার্টব্লককে অ্যাসিডিটি ভেবেছিলেন কেকে?
আরও পড়ুন- গ্যাস অম্বল থেকে কিডনির রোগ- জোয়ান জলে দূর হবে সকল সমস্যা, জেনে নিন এর উপকারীতা
আরও পড়ুন- পুরুষরাও ইস্ট ইনফেকশনের শিকার হতে পারেন, মুক্তি পান এই ঘরোয়া উপায়ে
আরও পড়ুন- কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কি করবেন, হার্ট অ্যাটাক এবং এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়
চিকিৎসকরা বলেছেন, হৃদরোগের সমস্যাকে অ্যাসিডিটি বলে ভুল করে থাকেন অনেকেই। বহু মানুষই এই সমস্যাকে অ্যাসিডিটি ভেবে দিনের পর দিন উপেক্ষা করেন, এর ফলেই অনেকটা দেরি হয়ে আর তখন কিছুই করার থাকে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, 'হৃদরোগের সমস্যা এমন একটি রোগ যেখানে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে রোগীকে সহজেই বাঁচানো যায়, আবার যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়া যায় তাহলে রোগীকে বাঁচানো অসম্ভব।
হৃদরোগের সমস্যাকে অ্যাসিডিটি ভেবে ভুল করা হয় কেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত অ্যাসিডিটির সমস্যা শুরু হয় পেট জ্বালা থেকে। এই জ্বালা ভাব ধীরে ধীরে বুক ও গলার দিকে উঠে আসতে থাকে। পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই এর মূল কারণ। এই অ্যাসিড ধীরে ধীরে খাদ্যনালী হয়ে উপরের দিকে উঠে আসলে বুক জ্বালার মতো সমস্যা দেখা দেয়। আর হৃদ্রোগের সমস্যা শুরু হয় বুক থেকে। ক্রমে সেই ব্যথা বাঁ হাত ও কাঁধের দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং ধীরে ধীরে শারীরিক ক্লান্তি, বুক-পিঠ ভারী হয়ে ওঠার সমস্যা সৃষ্টি হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বুকে জ্বালা বা বুকে ভারী ভাবের এই সমস্যাকে অনেকেই এক করে ফেলেন বলে জানা গেছে।
কী করা উচিত?
অ্যাসিডিটি আর হৃদরোগকে বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়, চিকিৎসকদেরই যেখানে সমস্যা হয় বুঝতে সেখানে সাধারণ মানুষ হিসাবে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কার্যত নেওয়া এক প্রকার অসম্ভব। কাজেই শরীরে এই ধরনের কোনও অসুবিধা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। ক্ষনিকের ভুলেই যেখানে প্রাণ চলে যায় সেখানে এই ধরণের সমস্যা দেখা দিলে নিজের মত করে ওষুধ খাওয়া বা উপেক্ষা করা উচিত নয়।