সংক্ষিপ্ত
বিয়েবাড়ির পাতে যখন স্টাটার্ড হিসাবে ফিসফ্রাই বা বাটাারফ্রাইয়ের সঙ্গে স্যালাড দেওয়া হয় তখন সেই স্যালাড যে খান সেটাতেই কিন্তু নিজেই খাল কেটে কুমির আনছেন। মনে রাখবেন, সবুজ ডায়েটের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিষ আপনার অজান্তেই আপনার শরীরে প্রবেশ করছে।
দুপুরে বা রাাতে খাবার টেবিলে স্যালাড অনেকের বাড়িতেই কিন্তু মাস্ট। আমরা লকলেই ভাবি যে খাবার পর যদি স্যালাড খাই তাহলে খাবার খুব ভালো ভাবে হজম হয়ে যাবে। বিশেষ করে জাঙ্ক ফুড বা স্ট্রিট ফুড খেলে এই পন্থা আমার আপনার মত সাধাারণ মানুষ হামেশাই অবলম্বন করে থাকি। ঘরের তৈরি স্যালাড তো ঠিক আছে। কিন্তু রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে মনপসন্দ খাবার খাওয়ার সময় বা বিয়েবাড়ির পাতে যখন স্টাটার্ড হিসাবে ফিসফ্রাই বা বাটাারফ্রাইয়ের সঙ্গে স্যালাড দেওয়া হয় তখন সেই স্যালাড যে খান সেটাতেই কিন্তু নিজেই খাল কেটে কুমির আনছেন। মনে রাখবেন, সবুজ ডায়েটের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিষ আপনার অজান্তেই আপনার শরীরে প্রবেশ করছে।
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই কিন্তু সত্যি। নিশ্চই ভাবতেন তো, মা-দিদিমাদের আমল থেকে শুনে আসছেন খাবার পর স্যালাড খেলে খাবার ভাল হজম হয়, তৈলাক্ত খাবার খেলে স্যালাড খাওয়া উপকারী। এই ধারনাটা একদম ঠিক, শুধু বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। আর নিজের শরীরকে ঠিক রাখতে এই সীমাবদ্ধতা গুলো আপনার অবশ্যই জানা উচিত। কেন রাস্তার ধারে খাবারের সঙ্গে পরিবেশন করা স্যালাড বা বিয়ের বাড়ির স্যালাড খাবেন না সেই বিষয় বিস্তারিত জেনে নিন। আপনি যদি একজন স্বাস্থ্যসচেতন হন তাহলে ঘরে বানান হেলদি স্যালাড আর নিজেকে সুস্থ রাখুন।
অনেকেই হেলদি ফুড ট্রেন্ডে স্যালাডকে রাখছেন। কিন্তু খাদ্য বিশারদ মতে, অনেক মানুষই জানেনই না সাধারণ কাজ করার শরীরে কতটা ক্যালরি প্রয়োজন। শশা, টমেটো, গাজরের সমন্বয়ে যে স্যালাড তৈরি হয় তা নিতান্তই সাদামাটা। তাই অনুষ্ঠান বাড়িতে স্যালাডের সঙ্গে যে ফ্রায়েড ব্রেড, ফ্রায়েড নুডলস, চিজ ইত্যাদি থাকে সেটা আবার স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনর স্যাালাড দেখতে ফ্যান্সি কিন্তু গুণগত মানে একেবারে নিম্ন। স্যালাডে যখন চিজ বা মেয়োনিজ দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে আপনার সামনে পরিবেশন করা হচ্ছে তাতে আপনার শরীরে অনেকখানি ক্যালোর প্রবেশ করছে। এরজন্য আপনাকে জিমে গিয়ে কসরত করতে হয়। তাই বিয়েবাড়িতে খাবার আগে অবশ্যই কাস্টমাইজ করে খান।
হাল ফ্যাশনের বিয়ে বাড়িতে বুফে সিস্টেম আজকাল খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখবেন, বিয়ে বাড়ির খাবার যতই সুন্দর করে সাজানো থাক, আপনার চোখ যতই সেই খাবারগুলোকে আকৃষ্ট করুক না কেন, হাইজিন গত সমস্যার একটা ব্যাপার কিন্তু থেকেই যায়। স্যালাডের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা ভালোভাবে মনে রাখতে হবে যে, স্যালাড থেকে নানারকম এলার্জিক ফাঙ্গি বা ইনসেক্ট আপনার শরীরে প্রবেশের আশঙ্কা থেকে যায়। স্যালাড কতক্ষণ আগে কাটা হয়েছে সেটা জাানার যেহেতু সুযোগ থাকে না, তাই যদি দীর্ঘক্ষণের কাটা স্যালাড হয় তাহলে সেখানে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয়। অনেকসময় এগুলো খেলে ডায়েরিয়া, বমি, ওরাল হার্পিস, পিতজ্বর এর মত উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন-প্রতিদিনের পাতে রাখুন ৩ টি করে কলা, মুক্তি পাবেন ১০ টি জটিল সমস্যা থেকে
আরও পড়ুন-গরমের রাতে স্নান করে শুতে যাওয়ার অভ্যাস, ভালো ও সতেজ রাখবে মন ও শরীর
ফ্যান্সি স্যালাডে প্রোটিননের বিপুল ঘাটতি থাকে। স্যালাডে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার থাকলেও তা পেশিতে প্রয়োজনীয় প্রোটিন দিতে পারেনা। প্রোটিন এর অনুপস্থিতির ফলে শরীরে মেটাবলিজম তৈরির গতিতে ধীর করে দেয়। ফলে মাথাঘোরা, দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে পরবর্তী ভারী খাওয়ার খাবার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে অতিরিক্ত ওজনের পথ প্রসস্থ হয়। মনে রাখবেন স্যালাডে ব্যবহার হওয়া রিচ সস, অলিভ অয়েল, ফ্রায়েড অনিয়ন, পেকান, চিজ, প্রসেসড বেকন ইত্যাদি শরীরে টক্সিন ও কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। স্নায়ুতন্ত্র এর সক্রিয়তা হ্রাস করে।
বিয়ে বাড়ি বা অনুষ্ঠান বাড়ির স্যাালাডের আরেকটি ক্ষতিকারক দিক হল কাঁচা বা হাফ স্টিমড অবস্থায় সার্ভ করা হয়। এতে ক্রিপ্টোপরিডিয়াম ইনফেকশন হবার প্রবল সম্ভবনা থাকে। আমেরিকার টেনেসি স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গিয়েছে, গ্রাউন্ড ভেজিটেবল থেকে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণরূপে গূর করতে তা ক্লোরিন জলে ধোয়া হয়ে থাকে। এর ফলে আপনার শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিক ঢুকতে পারে। তাই অনুষ্ঠান বাড়িতে স্যালাড খুব ভেবেচিন্তে খাবেন। আর বাড়িতে যদি হেলদি স্যালাড বানাতে চান তাহলে এতে ফ্রায়েড আইটেম এর পরিবর্তে গ্রিল্ড চিকেন, টফু, পনির বা ডিম ব্যবহার করুন। ফ্যাট এর জন্য অভক্যাডো বা অন্য ড্রাই ফ্রুট এতে যোগ করতে পারেন।