ভারতীয় ক্রীড়া (Indian Sports) ক্ষেত্রে ও নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও ব্যর্থতা, লড়াই ও সাফল্যের সিঁড়ি যারা ধাপে ধাপে উঠেছেন এমন ব্যক্তি খুবই কম। তাদের মধ্যে অন্যতম হলনে কিংবদন্তী (Legend) দৌড়বিদ মিলখা সিং (Milkha Sing)। স্বাধীনতার ৭৫ তম (India 75) র্ষে মিলখা সিংয়ের জীবন সত্যিই অনুপ্রেরণার।
কোমারাম ভীম ছিলেন হায়দরাবাদে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মাথা তোলা এক ব্যক্তি। গোন্ডা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কোমারাম ভীম ছিলেন চারিত্রিকভাবে প্রচণ্ড দৃঢ়চেতা এবং প্রতিবাদী। সেইসঙ্গে প্রবল দেশপ্রেমিক। ব্রিটিশের অধীনে থাকা করদরাজ্য নিজামের শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন ভীম।
৮ আগস্ট, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধি ১৯৪২ সালে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (AICC) বম্বে অধিবেশনে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেছিলেন। কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা জেল বন্দি হয়ে যাওয়ার পর মহিলা নেত্রীরা নজিরবিহীনভাবে পুলিশি অত্যাচারের মুখে সুসংবদ্ধভাবে আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। গুলি এসে লাগল তাঁর পায়ে, হাতের শঙ্খ মাটিতে পড়ে গেল, পরের বুলেটের আঘাতে হাত নেমে এলো মাটিতে। তখনও তিনি বলছেন, “ইংরেজ তুমি ভারত ছাড়ো।”
জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠি যায় সরকার বাহাদুরের ঘরে। চিঠিতে লেখা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ত্যাগ করছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর এই প্রতিবাদের ভাষা রীতিমত নাড়িয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকারকে।
ভারতকে স্বাধীন করতে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে ব্রিটিশদের হাত থেকে রেহাই পান। সুভাষ চন্দ্র বসু তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর জীবনের সংগ্রামে ভরা যাত্রা এবং দেশকে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা এক অমর-গাথা হিসেবে পরিচিত।
জেআরডি টাটা। পুরো নাম জেহাঙ্গির রতনজি দাদাভয় টাটা। ব্রিটিশদের মুখের উপরে তাঁদের জাত্যাভিমা এক কড়া থাপ্পড় কষিয়েছিলেন তিনি। ভারতের বুকে আজ যে টাটা গোষ্ঠী এক সুমহান ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে তাঁদের নেতৃত্বাধীন ব্যবসার- তার সূচনাটা হয়েছিল জেআরডি টাটার হাত ধরে। বলতে গেলে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জেআরডি-র উত্থান ছিল স্বদেশিয়ানার এক ঢঙ্কানিনাদ।
অসমের ভোগেশ্বরী ফুকানানি ছিলেন ৮ সন্তানের জননী। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান আজও স্মরণীয়। অসমের বেহরামপুরের গৃহবধূ ভোগেশ্বরী ফুকানানি ৬০ বছর বয়সে স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। এত বয়সে এক মহিলার সাহস এতটাই সকলের নজর কেড়েছিল যে আজ স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তিতে তাঁর নাম সমানভাবে উচ্চারিত হচ্ছে।
ভারতের সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দার দেশপ্রেমের এক আদর্শ উদাহরণ। মাস্টারদা সূর্য সেনের সশস্ত্র সংগ্রামের মন্ত্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রীতিলতা ব্রিটিশের হাতে ধরা পড়তে চাননি। বরং সগর্বে পটাশিয়াম সায়েনায়াড খেয়ে শহিদ হয়েছিলেন দেশের পরাধীনতা মোচনের আন্দোলনে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একটা পুরো পরিবার নিজেদের উৎসর্গ করে দিয়েছিল। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসঙ্গে এসে পড়লে কোনওভাবেই সিধু-কানু ভ্রাতৃদ্বয়ের কথা বাদ দেওয়া যায় না। যেভাবে এই দুই ভাই সশস্ত্র আগ্নেয়াস্ত্রে সমৃদ্ধি ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে শুধুমাত্র তীর-ধনুককে সম্বল করে লড়াই করেছিলেন তা আজও স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় স্বাধীনতার এই লড়াইয়ে সিধু-কানুর সঙ্গে তাঁর দুই ভাই এবং বোনও শহিদ হয়েছিলেন।