বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘুদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে, তা বেমালুম অস্বীকার করেছে মহম্মদ ইউনূস প্রশাসন। এখনও বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে।

তিনি নিজে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। কিন্তু গত ৬ মাসে নিজেদের দাবি পূরণের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনও সদিচ্ছা বা পদক্ষেপ দেখতে পাননি। শুধু আশ্বাসই সার। উল্টে সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের উপর যাবতীয় অত্যাচার, হামলা, বাড়ি-মন্দির ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, খুন-ধর্ষণের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক যোগ অস্বীকার করেছে মহম্মদ ইউনূস সরকার। এই পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে ঢাকার রমনা কালী মন্দিরের বাইরে অনশন শুরু করেছেন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী সুস্মিতা কর। তাঁকে বুধবারই ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়। কিন্তু জোর করে খাবার খাওয়ানো সম্ভব হয়নি। সুস্মিতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম। তিনি সুস্মিতাকে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু অনশন প্রত্যাহার করেননি সুস্মিতা। তিনি অনশন স্থলে ফিরে এসেছেন।

কী দাবি সুস্মিতার?

ঢাকা থেকে ফোনে এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা জানিয়েছেন, 'আমি বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনে ছিলাম। আমাদের যে আট দফা দাবি ছিল, তা এখনও পূরণ হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমিও প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে দেখা করেছিলাম। তিনি সেই সময় বলেছিলেন, কিছুটা সময় দরকার। কিন্তু ৬ মাস কেটে গিয়েছে। সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে সরকারের কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। শুধু হিন্দু না, বাংলাদেশে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসীরাও সংখ্যালঘু। সবার অধিকারের জন্যই আমরা লড়াই করছি। আট দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি অনশন চালিয়ে যাব। এক সুস্মিতা মরে গেলে হাজার হাজার সুস্মিতা জন্ম নেবে।'

বাংলাদেশে অধিকার পাবেন সংখ্যালঘুরা?

সুস্মিতা জানিয়েছেন, 'অগাস্টে আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা আট দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। সেপ্টেম্বরে আমাদের আন্দোলনে যোগ দেন চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভু। তাঁকে গ্রেফতার করা হল। কিন্তু তিনি শুরু থেকে আন্দোলনে ছিলেন না। আট দফা দাবি এখনও পূরণ করা হল না। আমি উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলাম। চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। সমন্বয়ক মাহফুজ আলম বলেছিলেন, আমাকে নিয়ে উত্তরবঙ্গে যাবেন। সংখ্যালঘুদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন সরকার বলছে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ মিথ্যা। সরকার দ্বিচারিতা করছে। সংখ্যালঘুদের উপর যদি অত্যাচার না-ই করা হবে, তাহলে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়েছিল কেন? সরকারকে জবাব দিতে হবে।'

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

আরও পড়ুন-

'হাসিনার উস্কানিমূলক মন্তব্য বন্ধ করা হোক,' ধানমণ্ডির অস্বস্তি কাটাতে ভারতকে চিঠি বাংলাদেশের

শেখ হাসিনার প্ররোচনাতেই ধানমণ্ডিতে মুজিবের বাড়িতে হামলা, দাবি বাংলাদেশ সরকারের

YouTube video player