সংক্ষিপ্ত
অন্যতম হাইভোল্টেজ আসন ভবানীপুর। কারণ, এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ৮টা থেকে এই কেন্দ্রে গণনা শুরু হয়েছে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে মোড়া রয়েছে গণনাকেন্দ্রে।
ভবানীপুর-সহ (Bbabanipur By Election) ৩ কেন্দ্রের ভোটের ফল ঘোষণা আজ। ভবানীপুর উপনির্বাচনের পাশাপাশি জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা (Jangipur and Samserganj Assembly Election) কেন্দ্রের ফলও আজ প্রকাশিত হবে। ইতিমধ্যেই গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ভবানীপুরে গণনা হবে ২১ রাউন্ড। জঙ্গিপুরে ২৬ রাউন্ড ও সামশেরগঞ্জে ২৪ রাউন্ড। গতকাল রাত থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় স্ট্রংরুমগুলিকে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে ভোট গণনাকেন্দ্রগুলি। মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচন হলেও সবার নজর রয়েছে ভবানীপুর উপনির্বাচনের দিকে। এই কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে।
অন্যতম হাইভোল্টেজ আসন ভবানীপুর। কারণ, এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সকাল ৮টা থেকে এই কেন্দ্রে গণনা শুরু হয়েছে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে মোড়া রয়েছে গণনাকেন্দ্রে। প্রথম বলয়ে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ, দ্বিতীয় বলয়ে রাজ্য পুলিশ ও তৃতীয় বলয়ে অর্থাৎ গণনাকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মোট ২৪ জন জওয়ান বাইরে মোতায়েন রয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
ভবানীপুরের পাশাপাশি জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল, সপ্তম দফায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও দুই প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের পাশাপাশি জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়। জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০১ জন। মোট ভোট পড়েছে ৭৬.১২ শতাংশ। এই কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়াই করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন, বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাস এবং আরএসপি প্রার্থী জানে আলম মিঞা। অন্যদিকে, সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭১৫জন। মোট ভোট পড়েছে ৭৮.৬০ শতাংশ। এই কেন্দ্রে মোট ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম, বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ, কংগ্রেস প্রার্থী জৈদুর রহমান, এবং সিপিআইএম প্রার্থী মোদাসসর হোসেন। মোট ৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে এই দুই কেন্দ্রে নির্বাচন হয়েছে।
সূত্রের খবর, স্ট্রং রুমে রাতেই ৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সকাল ৮টা থেকে জঙ্গিপুর পলিটেকনিক কলেজে দুই কেন্দ্রের ভোট গণনা শুরু হয়েছে। সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ২৪ রাউন্ড গণনা হবে এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের গণনা হবে ২৬ রাউন্ড। দুটি কেন্দ্রের জন্য মোট ১৪ টি করে টেবিল রয়েছে। বিকেলের মধ্যেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হবে। কংগ্রেস নাকি তৃণমূল, শেষ হাসি কে হাসবে তা বোঝা যাবে এই জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলের পর।
আরও পড়ুন- নিম্নচাপের জের, আজ ভোট গণনার দিনেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ উত্তরবঙ্গে
যদিও উপনির্বাচনের গণনা নিয়ে আগেই আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল, বিজেপি দুই দলই। ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিশ্চিত। ৫০ থেকে ৭০ হাজার ভোটে জিতবেন তৃণমূল নেত্রী। আমাদের কাছে মমতার ভোট লড়াই একটা উৎসব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত জিতবেন, সবাই জানে। কত ভোটে জিতবেন, তার প্রতিক্ষায় সবাই।" আর বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "আমরা জনতার উপরে ভরসা রেখেছি। হাতে আমাদের যা ক্ষমতা ছিল সেই ক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রচার করেছি। আমাদের প্রার্থী অসাধারণ লড়াই করেছেন।"
আরও পড়ুন- আজ ভবানীপুর উপ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা, অপেক্ষায় ৩ হেভিওয়েট আইনজীবী
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে হারান তিনি। এদিকে মমতা লড়াই করেছিলেন নন্দীগ্রাম আসন থেকে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি। কিন্তু, সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে জিতে যান শুভেন্দু। তবে রাজ্যে বিপুল ভোট পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। যদিও 'মুখ্যমন্ত্রী'-র পদ ধরে রাখার জন্য নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে কোনও না কোনও আসন থেকে জিততে হবে। নির্বাচনে ভবানীপুর আসন থেকে জিতলেও তারপরই ইস্তফা দেন শোভনদেব। ফলে সেই আসনে উপনির্বাচন নিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। আর সেই আসন থেকেই লড়াই করেন মমতা। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রিয়ঙ্কা টিব্রেওয়াল (Priyanka Tibrewal)। সিপিএমের হয়ে লড়ছেন শ্রীজীব বিশ্বাস। ৩০ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল প্রায় ৫৫ শতাংশ। ২০১১ সাল থেকে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ভবানীপুর। যদিও এবার সেখানে শেষ হাসি কে হাসবে এখন সেটাই দেখার।