সংক্ষিপ্ত
প্রয়াত প্রখ্যাত স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টেস্ট টিউব শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। তার প্রতিষ্ঠিত আইআরএম অর্থাৎ ইনস্টিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনে সুলভে আইভিএফ পদ্ধতিতে লক্ষ মহিলা সাফল্যের সঙ্গে তাঁদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
প্রয়াত প্রখ্যাত স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টেস্ট টিউব শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। সল্টলেক একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেশ কিছু দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি ছিলেন বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। একুশ সালে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হন। তার প্রতিষ্ঠিত আইআরএম অর্থাৎ ইনস্টিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনে সুলভে আইভিএফ পদ্ধতিতে লক্ষ মহিলা সাফল্যের সঙ্গে তাঁদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া গোটা রাজ্যে।
প্রখ্যাত গাইনেকোলজিস্ট ও ভারতবর্ষের কৃত্রিম প্রজননবিদ্যার অন্যতম পথপ্রদর্শক, প্রফেসর চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী, সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে 'ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল'-এ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪। বেশ কয়েকদিন আগে প্রফেসর চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। শুধু সেরিব্রাল স্ট্রোকই নয়, চিকিৎক চক্রবর্তী নিউমোনিয়া সহ একাধিক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭ মার্চ থেকে 'ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল'- এর সিসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন। 'ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল' পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
আরও পড়ুন, 'আমাকে বলেছিল, ধর ওকে রেপ করব', হাঁসখালিকাণ্ডে সিবিআই-র কাছে এল ভয়াবহ তথ্য
কৃত্রিম উপায়ে প্রজননের ক্ষেত্রে চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর পরিচিতি দেশ জুড়ে। ১৯৮৬ সালে তিনি কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে গবেষণা এবং চিকিৎসার জন্য আইআরএম অর্থাৎ ইনস্টিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন প্রতিষ্ঠা করেন।পরবর্তীকালে গবেষণাপত্র তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিউট ফর ম্যাডিক্যাল রিসার্স-র (আইসিএমআর) হাতে তুলে দেন। এই বর্ষীয়ান চিকিৎসকের প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন অসংখ্য নিঃসন্তান মায়ের কোল ভরিয়ে দিয়েছে। সন্তানলাভে আজ খুশি সেই সকল মা।ভারতে কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ নলজাতক গবেষণা এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন অগ্রগণ্য।
ভারতের প্রথম টেস্ট টিউব বেবির সৃষ্টিকর্তা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা তুলে এনেছেন। বিশেষত তাঁর সঙ্গেও কাজ করার পরেই টেস্ট টিউব শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর সাহচার্য পান তিনি। তবে চিকিৎসক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছেন, এই সমাজ কখনও সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। বরং বারবার প্রতিবন্দকতা এসেছে তাঁদের কাজে। উল্লেখ্য, প্রতিবন্দকতা পেয়েছিলেন ভারতের প্রথম টেস্ট টিউব বেবির সৃষ্টিকর্তা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ও। এত বছর পরে যাকে নিয়ে সবাই চিকিৎসামহলে মাথায় করে রাখে, তিনিও একটা সময় তার গবেষণা পত্র নিয়ে অবহেলার শিকার হন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তাকে যেতে বাধা দেয়। তীব্র অপমানে শেষ অবধি আত্মহত্যা করেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। যদিও পরবর্তীতে ভারতে কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ নলজাতক গবেষণা এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন অগ্রগণ্য। তবে কম বাধার মুখে পড়তে হয়নি তাকেও।