সংক্ষিপ্ত
- কেরলের কোঝিকোড়ের করিপুর বিমানবন্দরে তখন মুষল ধারায় বৃষ্টি পড়ছে
- অবতরণের সময় বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমান
- আহত যাত্রীদের বাঁচার আর্তি-উদ্ধার হওয়া শিশুর চোখে কালো নিকশ ভয়ের ছায়া
- এমনই উত্তর না পাওয়া প্রশ্নে গলা বুজে আসা মুহূর্তের সাক্ষী থাকল কেরল
শুক্রবার সন্ধ্যায় কেরলের কোঝিকোড়ের করিপুর বিমানবন্দরে তখন মুষল ধারায় বৃষ্টি পড়ছে। আর সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৩৮ মিনিটে চরম নির্মম বিমান দুর্ঘটনা। আহত যাত্রীদের বাঁচার আর্তি এবং উদ্ধার হওয়া শিশুর চোখে তখনও কালো নিকশ ভয়ের ছায়া এবং তারই মাঝে বৃষ্টি ছাপিয়ে সাইরেন বাজছে অ্যাম্বুল্যান্সের। বিপদ সঙ্কেতের আলোয় বাঁচার শেষ আলোটুকু এবং 'প্রিয়জন বেঁচে আছে তো'। দুবাই থেকে কোঝিকোড়ে আসা বিমান রানওয়ে থেকে পিছলে খাতে পড়ার পরে এমনই এমনই উত্তর না পাওয়া প্রশ্নে গলা বুজে আসা মুহূর্তের সাক্ষী থাকল কেরল।
আরও পড়ুন, ক্যাপ্টেন দীপক সাথে, কেরলের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট বায়ুসেনার প্রাক্তন উইং কমান্ডার
বিমানটি ভেঙে পড়ার প্রবল শব্দেই স্থানীয় বাসিন্দারা বুঝতে পারেন, বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। মুহূর্তেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তাঁরা। তাঁদের এক জন জানিয়েছেন, ' দেখলাম শিশুরা বিমানের আসনের নীচে আটকে ছিল। যত ক্ষণে আমরা পৌঁছই তত ক্ষণে কয়েক জনকে বিমান থেকে নামানো হয়েছে। অনেকের হাত-পা ভেঙে গিয়েছিল। আমার হাত আর শার্ট ভিজে গেল রক্তে।' উদ্ধারকার্যে শামিল আর এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, আহত পাইলটদের ককপিট ভেঙে বার করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য মৃত্যু হয়েছে দুই পাইলটেরই। ঘটনার আকস্মিকতা কথা হারিয়েছে অনেক যাত্রী। অ্যাম্বুল্যান্স আসার আগেই স্থানীয় বাসিন্দারা অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আরও পড়ুুন, 'কোঝিকোড়ের বিমান দুর্ঘটনায় আমি ব্যথিত', প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় কেরলের কোঝিকোড়ের করিপুর বিমানবন্দরে তখন মুষল ধারায় বৃষ্টি পড়ছে। সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৩৮ মিনিটে অবতরণের সময় বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি বিমান। ক্রু এবং যাত্রী মিলিয়ে মোট ১৮৪ জনকে নিয়ে নিয়ে বিমানটি দুবাই থেকে আসছিল। বন্দে ভারত মিশনের আওতায় দুবাই থেকে প্রবাসী ভারতীয়দের দেশে নিয়ে আসছিল বিমানটি। নামার সময় রানওয়ে পার করে ছিটকে পড়ে বিমানটি। তবে আগুন না লাগলেও এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানটি ৩০ ফুট গভীর একটি খালে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার পরই দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন এবং অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলেছে উদ্ধারকাজ। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই মর্মান্তিক ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ১২৩ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন, ১৮৪ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে দুই টুকরো এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, ভয়ানক দুর্ঘটনায় মৃত পাইলট
অপরদিকে, আহতদের কোঝিকোড়ের সাতটি ও মালাপুরমের কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই কোঝিকোড়ের বেবি মেমোরিয়াল হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনেরা। সকলেই হাসপাতালে ঢুকে খবর নিতে চাইলেও করোনা নিষেধাজ্ঞার কারণে সতর্কতা নিতে বাধ্য হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেকে মাস্ক পরে রয়েছেন কি না দেখে নেওয়া হয়। এরপরেই করোনা বিধি মেনে হাসপাতালে ভিড় না হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে আত্মীয়দের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।