ধূমপায়ীদের জন্য মুখের স্বাস্থ্যবিধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি উন্নত করার কিছু উপায় রয়েছে। সেগুলি কী কী, তা এখানে দেখে নেওয়া যাক।

আমরা সবাই জানি যে সিগারেট খেলে ফুসফুস এবং হৃদপিণ্ডের মতো অঙ্গগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু ধূমপানের কারণে আরও একটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জানেন কি? আর সেটি হলো আমাদের মুখ।

হ্যাঁ, সিগারেট বা হুঁকোর মতো তামাকজাত দ্রব্য নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের ক্ষয়, মাড়িতে সংক্রমণ এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। এর ফলে দৈনন্দিন জীবনও প্রভাবিত হতে পারে। আপনি ধূমপায়ী হলেও মুখের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবেই এর ঝুঁকিগুলি পুরোপুরি কমানো বা এড়ানো সম্ভব। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কীভাবে মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করবেন এবং মুখের স্বাস্থ্যবিধি উন্নত করার উপায়গুলি কী কী।

ধূমপান কীভাবে দাঁত এবং মাড়িকে প্রভাবিত করে?

  • সিগারেটের তামাক জ্বালানোর পরে এতে হাজার হাজার রাসায়নিক তৈরি হয়, যা মাড়ির টিস্যু এবং দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি করে।
  • আমাদের মুখের লালা মাড়ি এবং দাঁত থেকে ময়লা পরিষ্কার করে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। কিন্তু ধূমপানের ফলে লালার এই সুরক্ষা ক্ষমতা কমে যায়।
  • ধূমপানের কারণে মাড়ির রোগ এবং দাঁতে পোকা বা ক্যাভিটি হয়, যা জীবাণু বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।
  • ধূমপায়ীদের মাড়িতে অস্ত্রোপচারের সময় জটিলতা বা ব্যর্থতার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • ধূমপানের কারণে গলা, মুখ এবং জিভে ক্যান্সার হতে পারে।

ধূমপায়ীদের জন্য অবশ্য পালনীয় মুখের স্বাস্থ্যবিধি:

- ধূমপায়ীদের প্রতিদিন দুবার ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে আলতো করে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। টুথপেস্টের ফ্লুরাইড দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করে এবং ক্যাভিটি প্রতিরোধ করে।

- প্রতিদিন ফ্লস করলে মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

- ধূমপায়ীদের অ্যালকোহল-মুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করা উচিত, কারণ এটি কার্যকরভাবে ব্যাকটেরিয়া দূর করে।

- ঘন ঘন জল পান করতে হবে। বিশেষ করে যাদের মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা আছে, তারা এই অভ্যাসটি মেনে চললে দাঁতের ক্ষয় এবং মুখের দুর্গন্ধের ঝুঁকি কমে।

- ধূমপায়ীদের অবশ্যই প্রতি ছয় মাস অন্তর ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে মাড়িতে কোনও সংক্রমণ আছে কিনা তা পরীক্ষা করানো উচিত এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

ধূমপায়ীদের জন্য এই মুখের স্বাস্থ্যবিধি শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদী সমাধান। তাই, ধূমপানের অভ্যাস পুরোপুরি ছেড়ে দিলেই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ধূমপান ত্যাগ করলে শুধু মুখের সমস্যাই নয়, অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও এড়ানো যায়।