শহরে শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়াচ্ছে রেসপিরেটরি সিনশিটিয়াল ভাইরাস বা RS ভাইরাসের সংক্রমণ। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে শিশুদের ভিড়ে না নিয়ে যাওয়ার এবং সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। 

শিশুদের মধ্যে বাড়ছে RS ভাইরাসের সংক্রমণ। RS ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট। হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে RS ভাইরাস আক্রান্ত শিশুদের। ১ মাসে পার্ক সার্কাসের ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ৪১ জন RS ভাইরাস পজিটিভ। একই ছবি শহরের বাকি হাসপাতাল গুলিতেও।

এই কারণে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে পুজোর মধ্যে বা এমনি কোন সময় খুব ভিড়ে শিশুদেরকে না নিয়ে যাওয়াটাই শ্রেয়।

RS ভাইরাস মারাত্মক জ্বর আর গলায় মারাত্মক ব্যথা, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসে। এমন উপসর্গ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে উপচে পড়ছে শিশুদের ভিড়। শ্বাসকষ্ট প্রবল হলে শিশুকে দিতে হচ্ছে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা পিকুতে। এদিকে সে বেডের সংখ্যা সীমিত। এই মুহূর্তে শহরের সরকারি হাসপাতালে কোথাও চল্লিশজন, কোথাও ত্রিশজন শিশু ভর্তি জ্বর-শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সর্বত্র একই ছবি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন পুজোর মুখে ফুসফুসের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে রেসপিরেটরি সিনশিটিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. দিব্যেন্দু রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, খটখটে রোদ। তারপরই হঠাৎ আকাশ কালো করে বৃষ্টি। তাপমাত্রার এই তারতম্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে আরএসভি ভাইরাস। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম, ফলে সহজেই তাদের ফুসফুসে আক্রমণ করছে ভাইরাস।

মূলত, এই ধরণের ভাইরাস (Virus) এই সময়ে অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায়। কিন্তু যাদের বয়স এক বছরের নীচে বা যাদের কোমর্বিডিটি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস বেশ সাংঘাতিক। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই ভাইরাস নিয়ে এখনই কোনও উদ্বেগ নেই। কিন্তু চিকিৎসকরা সাবধনতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। কোনও শিশুর যদি জ্বর, সর্দির মতো সমস্যা থাকে তাহলে তাদেরকে ভিড়ের মধ্যে না নিয়ে যাওয়ায় ভালো বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে তারা জানাচ্ছেন, গত দু’সপ্তাহের মধ্যে যেভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে উদ্বেগের বিষয় রয়েছে।

চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন জ্বর-সর্দি-কাশি যদি অনেকটা সময় ধরে টানা চলতে থাকে তাহলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এই ভাইরাসের কারণে শিশুর স্বাসকষ্ট বাড়লে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। এই ভাইরাস আগেও ছিল, ফলে এ নিয়ে এখনই এত আতঙ্কিত হওয়ার কারণ কিছু নেই বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক