আলু একদিকে যেমন পুষ্টিকর, অন্যদিকে অতি ব্যবহারে হতে পারে ক্ষতি। তাই সীমিত ও সঠিকভাবে প্রস্তুত করলে আলুর পুষ্টিগুণ গ্রহণ করা যায় নির্দ্বিধায়।
বাঙালির রান্নায় আলু যেন অবিচ্ছেদ্য অংশ। আলু ছাড়া সবজি, তরকারি, ডাল কিংবা মাংস—সবই যেন অপূর্ণ। কিন্তু ওজন বাড়া বা ডায়াবেটিস দেখা দিলেই প্রথম ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ হয়ে যায় আলু। অনেকের ধারণা, আলু মানেই ক্যালোরি ও শর্করার বোঝা। তবে বিজ্ঞান বলছে, আলু যদি সঠিকভাবে এবং পরিমিত খাওয়া যায়, তাহলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী হতে পারে।
আলুর পুষ্টিগুণ
আলু কেবলমাত্র কার্বোহাইড্রেট নয়, এতে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণও। যেমন -
* প্রোটিন ১.৯ গ্রাম * কার্বোহাইড্রেট ২০.১ গ্রাম * চিনি ০.৯ গ্রাম * ফাইবার ১.৮ গ্রাম * ফ্যাট ০.১ গ্রাম * এছাড়াও উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেট, রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও এই উপাদানগুলো শরীরের কোষকে রক্ষা করে, হজমে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
তবে কীভাবে খাওয়া যায়?
চিকিৎসক পারস আগরওয়াল বলেন, "আলুতে অনেক পুষ্টিগুণ আছে। তবুও ওজন বাড়বে কি বাড়বে না তা নির্ভর করে আপনি আলু কীভাবে খান তার উপর। আলু যদি কেবল সেদ্ধ করে এবং সীমিত পরিমাণে খান, তাহলে ওজন বাড়বে না। কিন্তু যদি প্রচুর তেলে আলু ভাজেন, তাহলে অবশ্যই ওজন বাড়বে"।
* সেদ্ধ বা বেক করা আলু খেতে পারেন, হালকা, সহজে হজমযোগ্য, কম ক্যালোরিযুক্ত।
* সীমিত পরিমাণে এবং অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবারের সঙ্গে খাওয়া গেলে রক্তে শর্করার প্রভাব কম হয়।
* ভাজা আলু উচ্চ ক্যালোরি, ফ্যাটযুক্ত হয়। এড়িয়ে চলাই ভালো। এতে স্থূলতার ঝুঁকি থাকে।
* আলু খোসা ছাড়িয়ে খেলে কিছুটা ক্ষতিকর উপাদান কমে যায়।
ডায়াবেটিস রোগীরা আলু খাওয়া
ডায়াবেটিস রোগীরা যদি বেশি ভাজা আলু খান, তাহলে কেবল সুগারই বাড়বে না, অন্যান্য সমস্যাও হবে।
* অতিরিক্ত আলু খেলে স্থূলতা বাড়বে, যা নিজেই অনেক বিপাকীয় রোগের জন্ম দেবে।
* ডিপ ফ্রাই করলে আলুর কার্বোহাইড্রেট ভেঙে গ্লুকোজ ও অ্যাক্রিলামাইড তৈরি করতে পারে — যা ক্ষতিকর। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।
* অধিক তেল ও মশলার ব্যবহারে তা ফ্যাটি লিভার ও স্থূলতার কারণ হতে পারে। অনেকক্ষণ উচ্চ তাপমাত্রায় তেলে ভাজলে আলুতে থাকা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেড়ে যায়।
