মেয়াদের তারিখ উল্লেখ নেই বলেই কি বছরের পর বছর ব্যবহার করা যায়? পড়ার মতো নোংরা না হলে আমরা তা পরিষ্কারও করি না। ফকে ' hygiene' থাকছে প্রশ্নের মুখে। তবে স্নানঘরের কোন সামগ্রী কত দিন ব্যবহার করা যায়, রইলো বিশদ।

ওষুধ থেকে শুরু করে সাজগোজের প্রসাধনী - মেয়াদ আছে সবকিছুরই। তবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক জিনিসপত্র আমরা ব্যবহার করে থাকি, যেগুলোর কোনো মেয়াদ উল্লেখ করা থাকে না। তাই বলে কি বছরের পর বছর একটানা সেগুলি ব্যবহার করা উচিত হবে? এতে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হয় না তো?

চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত পেশাদাররাও একই কথাই বলেন, রান্নাঘর থেকে স্নানঘরে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বেশিরভাগ জিনিসপত্রই একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পরিবর্তন করে নেওয়া উচিত। নয়তো স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হলে তা শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন দেখে নিই, কোন সামগ্রীগুলো নির্দিষ্ট সময়ের পর পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে।

১। তোয়ালে

পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কর্মরত ব্রিটেনের এক পেশাদার অলিভিয়া ইয়ংয়ের কথা অনুসারে, হাত-মুখ মোছার তোয়ালেটি একটা নির্দিষ্ট সময় পর কেচে পরিষ্কার করা এবং পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে। আপাতদৃষ্টিতে দেখে ময়লা হয়নি মনে হলেও, ভেজা তোয়ালে দীর্ঘদিন অপরিষ্কার থাকলে এতে হতে পারে জীবাণুর বাস।

তাই স্নানের পর গা মোছার ও হাত-মুখ মোছার তোয়ালে ২-৪ দিন অন্তর গরম জলে সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে। প্রতিবছর অথবা দেড় বছর পর পর পুরোনো তোয়ালে পরিবর্তন করার পরামর্শ দিচ্ছেন অলিভিয়া।

২। পাপোস

স্নান ঘরের সামনে রাখা পাপোস মাসের পর মাস পড়ে থাকে আধোয়া অবস্থায়। মাটিতে থাকায় ময়লা হয়েছে কিনা তা চোখেও পড়ে না,অথচ রোজ সেখানেই পায়ের ময়লা ও জলে ভিজে থাকছে পাপোসটি। ফলে জীবাণুর আখড়া হয়ে উঠছে।

পাপোসের নিচে রাবারের স্তর ২ দিন ছাড়া ছাড়া জলে সাদা ভিনেগার মিশিয়ে স্প্রে করে পরিষ্কার করুন, এতে ছত্রাক জন্মাবে না। আর পারলে প্রতি সপ্তাহে গরম জলে সাবান দিয়ে কেচে নিন পাপোসটি। দু'বছর অন্তর বদলে ফেলুন পুরনো পাপোস।

৩। বাথরুম পরিষ্কারের ব্রাশ

বাথরুম বা কমোড তো পরিষ্কার করেন, কিন্তু এগুলি পরিষ্কার করার ব্রাশটি ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয় কি? ব্রিটেনের স্নানঘরের পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিলো ৮২% মানুষ বাথরুম পরিষ্কারের ব্রাশটি সপ্তাহে একবারও পরিষ্কার করেন না। গলদটা এখানেই। ব্রাশ জীবাণুযুক্ত, অপরিষ্কার থাকলে বাথরুম পরিষ্কার করেও লাভ হবে না। তাই অন্তত ৬ মাসে একবার বাথরুম পরিষ্কার করার ব্রাশটি আলাদাভাবে পরিষ্কার করুন।

৪। লুফা

স্নানঘরের সাথে আবহাওয়ায় জীবাণুর দ্রুত ছড়ায়। আর গা পরিস্কারের লোপাটি ব্যবহার করার পর ভিজে অবস্থাতে স্নান ঘরে থেকে যায় দিনের পর দিন। তখন এতেও ছত্রাক এবং জীবাণুর বাসা হতে পারে, যা পরবর্তীতে ব্যবহারে আমাদের গায়েও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

চিকিৎসকেরা লুফা ব্যবহারের পর রোদে শুকিয়ে নিতে বলেন। এছাড়া ২ মাসের বেশি একই লুফা ব্যবহার করবেন না। ধুঁধুল ব্যবহার করলে ২ সপ্তাহ অন্তর বদলে ফেলুন।

৫। টয়লেট সিট

টয়লেট সিট কমোডের সাথে অ্যাটাচ থাকায় ঘন ঘন বদলানো যায় না। অথচ নিত্য ব্যবহারে এখানেই সবথেকে বেশি রোগজীবাণু বাসা বাঁধে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সংক্রান্ত পেশাদাররা পরামর্শ দেন, দীর্ঘ বছর এটি ব্যবহার করা গেলেও ২ দিন অন্তর অন্তর নির্দিষ্ট তরল দিয়ে টয়লেট সিট পরিস্কার করে নেওয়া দরকার। স্যানিটাইজ়ার স্প্রে বা স্যানিটাইজ়ার ওয়াইপস দিয়েও মুছে নিতে পারেন।