রাতে ঘুম থেকে বারবার উঠে প্রস্রাব করতে যাওয়া শুধুই বিরক্তিকর নয়, এটি হতে পারে লুকিয়ে থাকা কোনো শারীরিক সমস্যার লক্ষণ। তাই উপসর্গ অবহেলা না করে, সময়মতো সচেতন হওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

রাতে ঘুম থেকে বারবার উঠে প্রস্রাব করতে যাওয়া শুধুই বিরক্তিকর নয়, এটি হতে পারে লুকিয়ে থাকা কোনো শারীরিক সমস্যার লক্ষণ। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় নকটারিয়া (Nocturia)। সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা বাড়লেও, আজকাল অনেক তরুণ-তরুণীডের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ, অতিরিক্ত জলপান থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, প্রোস্টেটের বৃদ্ধি কিংবা কিডনি বিকলতার মতো সমস্যাগুলি। সময়মতো লক্ষণ বুঝে ব্যবস্থা না নিলে দীর্ঘমেয়াদে কঠিন অসুখে ভুগতে হতে পারে।

আসুন জেনে নি কী কী কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে হয়।

১। অতিরিক্ত জল পান

ঘুমানোর আগে অনেকেই জল খান। যার ফলে রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায়। বয়স বাড়লে মূত্রথলির পেশি শিথিল হয়ে যায়। ওভারঅ্যাকটিভ মূত্রথলি (OAB) ইন্টারস্টিশিয়াল সিস্টাইটিস বা মূত্রথলির ক্যানসারের মতো সমস্যার ফলে বারবার প্রস্রাব হতে পারে।

২। ক্যাফিন ও অ্যালকোহল খাওয়া

ক্যাফিন ও অ্যালকোহল প্রস্রাব বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেকেই রাতে কফি বা অ্যালকোহল পান করে থাকেন নিয়মিত। যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব পেতে পারে একজনের

৩। ডায়াবিটিস

বর্তমানে ঘরে ঘরে ডায়াবিটিস বা সুগারের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হলে একজনের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

৪। কিডনি সমস্যা

কিডনির কর্মক্ষমতা কম থাকলে এই অঙ্গ ঠিকভাবে রক্ত পরিশ্রুত করতে পারে না। এর ফলে বারবার প্রস্রাব জমা হয়। ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হতে পারে।

৫। প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা

পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি (BPH) প্রস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি থাকে। ফলে রাতে বারবার প্রস্রাব পায়।

প্রতিরোধের উপায়

* শোয়ার অন্তত ১.৫–২ ঘণ্টা আগে থেকে জল বা তরল গ্রহণ বন্ধ রাখুন

* রাতে চা, কফি ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন

* রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন

* বয়সভিত্তিক প্রোস্টেট পরীক্ষার ব্যবস্থা করুন

* ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা হলে urologist বা নেফ্রোলোজিস্ট -এর পরামর্শ নিন

* খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন এবং ঘুমের সময়সূচি ঠিক রাখুন