গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা, পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘন ঘন কম পরিমাণে খাবার গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। এই পদক্ষেপগুলি মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ থাকে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নামে পরিচিত এই অবস্থাটি তখন ঘটে যখন শরীর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না। এটি মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। যদি এটি নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তবে প্রসবের সময় এবং পরে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রার ওঠানামার প্রধান কারণ হরমোনের পরিবর্তন। শরীর প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, হিউম্যান প্লাসেন্টাল ল্যাক্টোজেন সহ বিভিন্ন হরমোন উৎপাদন করে। এই হরমোনগুলি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস করে। 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কী করণীয়

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন তা জানার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল সঠিক খাবার খাওয়া। সুষম খাদ্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিরাপদ সীমার মধ্যে রাখতে সাহায্য করে। শস্য, শাকসবজি, ডাল জাতীয় খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হজম প্রক্রিয়া ধীর করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম এমন খাবারের উপর জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মিষ্টি আলু, বাদামী চাল, ডাল জাতীয় কম গ্লাইসেমিক খাবার রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।

কম পরিমাণে, ঘন ঘন খাবার খান

তিনবার বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ার পরিবর্তে বেশিবার কম পরিমাণে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। একবারে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে বলে জানিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সান ফ্রান্সিসকো হেলথ।

প্রতিদিন পাঁচ বা ছয়বার কম পরিমাণে খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শক্তির মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করতে পারে।

ব্যায়াম অভ্যাস করুন

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল নিয়মিত ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য হাঁটা কার্যকর।

রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন

রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাস্থ্যকর সীমার মধ্যে আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। গ্লুকোমিটার ব্যবহার করে বাড়িতেই পরীক্ষা করা যেতে পারে।

প্রচুর জল পান করুন

প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস জল পান করার চেষ্টা করুন। চিনিযুক্ত পানীয় বা জুস এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।