Kidney Care: নিয়মিত সময়ান্তরে হার্টের পরীক্ষা, সুগার টেস্ট করালেও কিডনির কোনও রকম টেস্ট সাধারণত করান না অনেকেই। অন্তত যত দিন না সমস্যা শুরু হচ্ছে। অথচ কিডনির অসুখই এখন বেড়ে গিয়ে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে।

Kidney Problem: কিডনি ফাংশন পরীক্ষা হল একগুচ্ছ মেডিক্যাল টেস্টের সিরিজ যা কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করে। এই পরীক্ষাগুলি রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা, অথবা কখনও কখনও উভয়ের সংমিশ্রণ হতে পারে। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনার কিডনি আপনার রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করতে, আপনার রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিডনি ফাংশন পরীক্ষা কী করে তার একটি বর্ণনা এখানে দেওয়া হল-

আপনার রক্তে বর্জ্য পদার্থ পরিমাপ করুন: সুস্থ কিডনি বর্জ্য পদার্থ ফিল্টার করে। যদি আপনার রক্তে এই মাত্রাগুলি বেড়ে যায়, তাহলে এটি একটি লক্ষণ হতে পারে যে আপনার কিডনি ঠিকভাবে কাজ করছে না। আপনার প্রস্রাবে অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন: আপনার প্রস্রাবে সাধারণত উচ্চ মাত্রার প্রোটিন বা রক্তকণিকা থাকা উচিত নয়। তাদের উপস্থিতি কিডনির সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। আপনার গ্লোমেরুলার ফিল্টারেশন রেট (GFR) অনুমান করুন: GFR হল আপনার কিডনি আপনার রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ কতটা দক্ষতার সাথে ফিল্টার করে তার একটি পরিমাপ। GFR অনুমান করার বিভিন্ন উপায় আছে, প্রায়শই রক্ত পরীক্ষা ব্যবহার করে।

কী কী পরীক্ষা করতে হবে?

  • সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট

এই পরীক্ষায় রক্ত বা প্রস্রাবের নমুনা নিয়ে তাতে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ক্রিয়েটিনিন হল একটি বর্জ্য পদার্থ, যা কিডনি ছেঁকে প্রস্রাবের সঙ্গে বার করে দেয়। এই বর্জ্যের পরিমাণ যদি বেশি হয়, তা হলে বুঝতে হবে, কিডনির অবস্থা ভাল নেই। রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকে।

  • সিস্ট্যানিন সি

সিস্ট্যানিন সি হল হল একটি প্রোটিন, যা দেহকোষ থেকে তৈরি হয়। এর স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে গড়ে ০.৬ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম হয়। তবে বয়স অনুযায়ী পুরুষ ও মহিলার ক্ষেত্রে এই পরিমাপটি কিছুটা আলাদা আসে। যদি এই প্রোটিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেড়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে, তা কিডনি ফেলিয়োরের লক্ষণ। অনেকেই পেশি তৈরি করতে নানা রকম প্রোটিন পাউডার ক্রিয়েটিনিন সাপ্লিমেন্ট নেন অথবা স্টেরয়েড খান, সে ক্ষেত্রে এর মাপটি ওঠানামা করে। অত্যধিক সাপ্লিমেন্ট নিলেও কিডনির ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত ল্যাবরেটরি ভেদে খরচ ১৩০০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে।

  • ইউরিন ডিপস্টিক টেস্ট

ডিপস্টিক ইউরিন টেস্ট হল প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করার একটি সহজ পদ্ধতি, যেখানে একটি বিশেষ রাসায়নিকে মাখানো স্ট্রিপ প্রস্রাবের নমুনায় রেখে দেওয়া হয়। স্ট্রিপের রং বদলায় ও তা প্রস্রাবে উপস্থিত বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা নির্দেশ করে। রঙের পরিবর্তন যত তীব্র হবে, প্রস্রাবে সেই সব পদার্থের পরিমাণ তত বেশি হতে পারে। যদি স্ট্রিপের রং বদল দেখে বোঝা যায় প্রস্রাবের নমুনায় রক্ত রয়েছে, তা হলে কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে, অ্যালবুমিন প্রোটিন বেশি হলে কিডনির ক্রনিক রোগের লক্ষণ, বিলিরুবিন থাকলে তা লিভারের রোগের লক্ষণ, কিটোন থাকলে ডায়াবিটিস ও কিডনির রোগের লক্ষণ। রুটিন পরীক্ষায় ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মতো খরচ পড়ে।

  • ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন

এটিও রক্তের একটি পরীক্ষা। রক্তে ইউরিয়া নাইট্রোজেনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ইউরিয়া নাইট্রোজেন হল প্রোটিনের বিপাকের ফলে তৈরি হওয়া একটি বর্জ্য পদার্থ। সুস্থ কিডনি এটি রক্ত থেকে অপসারণ করে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বার করে দেয়। এর মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তা হলে কিডনির রোগের লক্ষণ ইঙ্গিত করে। এই পরীক্ষাতেও ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মতোই খরচ পড়ে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।