Drinking Water: 'জলই জীবন, প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করা উচিত।' এই কথাটা আমরা সবাই জানি। তবে সারাদিনে প্রয়োজনের থেকে কম জলপান, এমনকী অতিরিক্ত জলপানও ডেকে আনতে পারে বিপত্তি। জানুন কতটা জল খাবেন আপনি।

DID YOU
KNOW
?
অতিরিক্ত জলপানও ক্ষতিকর
কম জল খাওয়া যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, তেমনই মাত্রাতিরিক্ত জলপানও শরীরের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়।

Water: জলই জীবন, এই কথাটা সবাই জানেন, মানেনও। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দেহের ৪০ ভাগ রক্তরস বা প্লাজমা, দেহরস বা বডি ফ্লুইড, লসিকা বা লিম্ফ এবং টিস্যু ফ্লুইডে থাকে। আর বাকি মোট শতকরা ৬০ ভাগ থাকে জল। তাই শরীরে জলের প্রয়োজনীয়তাও অসীম। সারাদিনে প্রয়োজনের থেকে কম জলপান যেমন শরীরে বিপদ ডেকে আনতে পারে, আবার বেশিরভাগ মানুষই জানেন না যে, অতিরিক্ত জলপানও ডেকে আনতে পারে বিপত্তি। তাই এই প্রতিবেদনে একজন সুস্থ ব্যক্তির জলপানের সঠিক পরিমাপ ও খুঁটিনাটি জানব আমরা।

শরীরে কী কী কাজে লাগে জল?

  • জল দেহের তাপমাত্রার সমতা রক্ষা করে। 
  • কোষের বাইরের এবং ভেতরের চাপের ভারসাম্য রাখে জল। 
  • শরীরের নানা বর্জ্য পদার্থ রেচন অঙ্গে পৌঁছয় জলবাহিত হয়েই। 
  • হজমের জন্য প্রয়োজনীয় পাচক রস এবং উৎসেচক জল মাধ্যমেই কাজ করে। 
  • দেহের বিভিন্ন টিস্যুর দৃঢ়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা শরীরে জলের পরিমানের উপরেই নির্ভর করে। 
  • দেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং হাড়ের জয়েন্টের মধ্যে ঘর্ষণ এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করে জল। এমনকী ক্ষয়ও রোধ করে।

কম জলপানে কী হয় শরীরে?

জল কম খেলে জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হয় শরীরে। এইসময় জিভ শুকিয়ে যায়, চোখ বসে যায়, ইউরিনের পরিমাণ কমে যায়। এছাড়া বমি, পায়খানা, শরীরে প্রদাহ, হিট স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে।

তাহলে অতিরিক্ত জলপানে বিপত্তি কোথায়?

যাঁরা হার্ট বা কিডনির নানা অসুখে ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জলপানে বিপত্তি গুরুতর। তবে সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে। অতিরিক্ত জল আমাদের রক্তের আয়তন বাড়িয়ে দেয়। এই বাড়তি রক্তকে পাম্প করতে হার্টের ধমনী এবং পেশিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের লেফট ভেন্ট্রিকল হাইপারট্রফি হয়, যা ভবিষ্যতে হার্ট ফেলিওরের মতো ঝুঁকির সৃষ্টি করে। তাই ভালভের অসুখ হলে, অ্যাঞ্জিওপ্লাসটির পর, হৃদযন্ত্রে ছিদ্র থাকলে, বাইপাসের পর, পেসমেকার বসানোর পর ডাক্তারবাবুর পরামর্শ অনুযায়ী জল খাওয়ার পরিমাণ ঠিক করতে হবে। এছাড়াও পেটে, এমনকি ফুসফুসেও জল জমতে পারে, পা ফুলে যেতে পারে, বমি হতে পারে, আচ্ছন্ন ভাব আসতে পারে, খিঁচুনি আসতে পারে। অতিরিক্ত জল পানে কিডনির উপরেও চাপ বেশি পড়ে। রক্তের সোডিয়াম লবণের পরিমাণ কমে গিয়ে, নানারকম বিপদ ডেকে আনবে। শারীরিক অবসাদ, চিন্তাভাবনায় আচ্ছন্নতা, খিঁচুনি, এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তাই রক্তের সমস্যা বা কিডনির রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া জল খাবেন না।

তবে একজন সুস্থ ব্যক্তির কতটা জল পান করা উচিত?

অতিরিক্ত জলপানের বাতিকও এক ধরনের অসুখ। এর নাম সাইকোজেনিক পলিডিপসিয়া। এর ফলেই যত সমস্যা। তাই প্রয়োজন পর্যাপ্ত জলপান, না কম, না বেশি। ব্যক্তির বয়স, পেশা, আবহাওয়া, কাজের পরিবেশ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে একজন সুস্থ ব্যক্তির জল খাওয়ার পরিমাণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি দিনে ততটাই জল খাবেন, যতটা খেলে তিনি দিনে অন্তত দেড় লিটার মূত্র ত্যাগ করতে পারেন। গড়ে হিসাব করলে প্রতিদিন ২ লিটার বা বড় গ্লাসের সাত-আট গ্লাসের মতো জল খেলেই হবে। আবার, প্রচণ্ড গরমে যাঁদের প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হয় তাঁদের আরও এক লিটার বেশি খেতে হবে। তবে, একটি পাঁচ বছরের শিশু এবং পঞ্চাশ বছরের পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জলের চাহিদা আলাদা হবে। আবার, যিনি সারাদিন এসিতে বসে কাজ করেন, বা শীত বা বর্ষাকালে জলের চাহিদা একটু কমবে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।