Health News: পুজোর সময় যদি ঋতুস্রাব এর ডেট এসে থাকে তাহলে ওষুধ খেয়ে তা বন্ধ করতে চাইছেন জানেন কি এর পরিণাম? প্রচন্ড কোমরে আর তলপেটে ব্যথা হয় তা থেকে বাঁচবেন কি উপায়?

Health News: ঋতুস্রাব নিয়ে কমবেশি অনেকেই নাজেহাল। মাসের ওই চার থেকে পাঁচটা দিন যেন বড় যন্ত্রণার। কারও মেজাজ বিগড়ে যায় ঘন ঘন, কেউ আবার পেট-কোমরের ব্যথায় কাতর হন। ক্যালেন্ডারে ঋতুস্রাবের দিনটি নিয়েই বড় চিন্তা। 

হয়তো কোনও অনুষ্ঠান রয়েছে, কিংবা মধুচন্দ্রিমার বেড়ানো রয়েছে, অথবা উৎসব-পার্বণে যোগ দেবেন ভাবছেন, ঠিক সেই সময়টিতেই ঋতুস্রাবের দিন পড়লে উদ্বেগে ভোগেন অনেকেই। ঝক্কি এড়াতে ঋতুস্রাব পিছিয়ে দেওয়ার কথাও ভাবেন। এমন অনেককেই বলতে শুনবেন, গুটি কয়েক ওষুধ খেয়ে যদি ঋতুস্রাবের দিনটি ইচ্ছামতো পিছিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে আর ক্ষতি কী!

গোলমালটা হয় সেখানেই। ঋতুস্রাব পিছোনোর ওষুধ খাওয়া ভাল না খারাপ, তা না জেনেই ইন্টারনেট ঘেঁটে এমন অনেক রকম ওষুধ খেয়ে ফেলেন মেয়েরা বা ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করতে শুরু করেন, যার পরিণতি পরবর্তী সময়ে গিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।

তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক এই ওষুধগুলো আদৌ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নাকি খাওয়া যেতেই পারে।

* ঋতুস্রাব পিছনোর ওষুধ খেলে কী হতে পারে?

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ পাওয়া যায়। দামও বেশি নয়। আবার কিছু রকম গর্ভনিরোধক ওষুধও আছে। ওষুধ যা-ই হোক না কেন, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবেই। ঋতুস্রাব মানে মাসের চার থেকে পাঁচ দিন কেবল রক্তপাত হওয়া নয়, এর সঙ্গে হরমোনের ওঠানামাও জড়িত। সবটাই হয় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া মেনেই। তাই ঋতুস্রাব বন্ধ করতে বা পিছিয়ে দিতে চাইলে, পুরো শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকেই থামিয়ে দিতে হবে। ফলে হরমোনের ওঠানামাও নিয়ম মেনে হবে না। ঋতুকালীন চক্র যদি পিছিয়ে যায়, তা হলে অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় চক্রও উল্টো নিয়মে চলতে শুরু করবে। তখনই সমস্যা শুরু হবে।

সাধারণত ঋতুস্রাব যে দিন থেকে শুরু হবে, তার দুই থেকে তিন আগে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হয়। ঋতুস্রাব যত দিন পিছোতে চাইছেন, তত দিন ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার তিন থেকে চার দিনের মাথাতেই ঋতুচক্র শুরু হবে। এই যে একটানা ঋতুকালীন চক্রকে থামিয়ে রাখার প্রক্রিয়া, তাতেই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মাসিক চক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। অনিয়মিত রক্তপাত, শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি ফুলে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, মাইগ্রেন, হাঁপানির সমস্যা, মস্তিষ্কে ও ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। হজমের গন্ডগোল শুরু হতে পারে, ওজন বাড়তে পারে, স্তনে শক্ত পিণ্ড বা টিউমারও তৈরি হতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক। এমনকি, ব্যথা কমানোর ওষুধও একই সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে মত চিকিৎসকের। তা হলে উপায়?

* ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে প্রাকৃতিক উপায়ই ভরসা করা যায় :

ঋতুস্রাব সময়কালীন যন্ত্রণাকে ‘ডিসমেনোরিয়া’ বলে। এটি দু’ধরনের হতে পারে। ঋতুস্রাবের প্রথমে তলপেটে বেশি ব্যথা হয়, একে ‘প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া’ বলে। কমবয়সি, অবিবাহিতদের ক্ষেত্রেই এটা বেশি দেখা যায়। অন্য দিকে, তলপেটে সংক্রমণ, ফাইব্রয়েড, পলিপ বা এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কারণে ব্যথা হলে তাকে ‘সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া’ বলে। ব্যথা কমাতে ওষুধ না খেয়ে ভেষজ চা খেতে পারেন। আদা, লবঙ্গ, দারচিনি, ছোট এলাচ দিয়ে ফোটানো চা ব্যথা উপশমে অনেকটাই সাহায্য করবে।

ঋতুস্রাবের সময় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। মিষ্টি খেলে বেড়ে যাতে পারে ব্যথা। চটজলদি ব্যথা কমাতে তিলের তেল গরম করে মাখতে পারেন পেটে। এতেও ব্যথা অনেকটা কমতে পারে।

তলপেটে বা পিঠের দিকে গরম প্যাড বা উষ্ণ তোয়ালে রাখুন। গরম জলে স্নান করলেও ব্যথা কমে।

পালংশাক, বাদাম, কলা, ডার্ক চকোলেট ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস। এগুলি খেলেও যন্ত্রণা কমবে অনেকটাই।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।