স্বাভাবিক উপায়ে ওষুধ কম খেয়েও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়ামের পদ্ধতি আছে। সেগুলি নিয়ম করে মেনে চললে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি হবে, আবার ইউরিক অ্যাসিডের জন্য পছন্দের খাবার বাদ দেওয়ারও প্রয়োজন হবে না।

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে কিছু যোগাসন সাহায্য করতে পারে। যেমন ত্রিকোনাসন, যা হজম এবং বিপাক উন্নত করে। এছাড়াও, আদা ও হলুদের চা, তুলসী চা এবং শসা ও টমেটোর মতো কিছু খাবার খাওয়া যেতে পারে, যা প্রদাহ কমায় এবং শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে।

** ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সহায়ক যোগাসন গুলি হল:

* ত্রিকোনাসন: এই আসনটি হজম এবং বিপাক ক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সহায়ক।

* ব্রিস্ক ওয়াকিং : মাত্র ১৫-২০ মিনিটের হাঁটা। তবে খুব দ্রুত ও জোর কদমে হাঁটতে হবে। যদি ১৫ মিনিট হাঁটেন, তা হলে থামলে চলবে না। দ্রুত গতিতে হাঁটলে যেমন বাড়তি ক্যালোরি ঝরে যাবে, তেমনই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও কমবে। ব্রিস্ক ওয়াকিং যখন খুশি করা যায়। সকালে, দুপুরে বা রাতে খাওয়ার পরেও করতে পারেন। এতে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ওজনও কমবে!

* ফরোয়ার্ড ফোল্ড স্ট্রেচিং: সোজা হয়ে দাঁড়ান। তার পর কোমর ভেঙে দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের পাতা স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। মাথা যতটা সম্ভব নীচের দিকে ঝোঁকান। প্রথম প্রথম পায়ের পাতা স্পর্শ করতে সমস্যা হবে, ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাবে। সারা শরীরের স্ট্রেচিং হবে এই ব্যায়ামে।

* লাঞ্জেস: লাঞ্জেস খুব ভাল স্ট্রেচিং। একটি পা সামনে এগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে, আর একটা পা পিছনে দিয়ে স্ট্রেচ করে বসার মতো করে একবার উঠতে হবে ও নামতে হবে। কাঁধ যেন সোজা থাকে। এটি প্রথমে ১০টি করে প্রতি পায়ে তিন বার করলেই যথেষ্ট।

অন্যান্য যোগাসন: কিছু ক্ষেত্রে, আরও বিভিন্ন যোগাসন যেমন প্রাণায়াম এবং অন্যান্য স্ট্রেচিং-এর মাধ্যমে শরীরকে সচল রাখা এবং স্ট্রেস কমানোও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

* ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সহায়ক খাবার ও পানীয় :

* আদা ও হলুদের চা: এই দুটি উপাদানে থাকা প্রদাহরোধী গুণাবলী জয়েন্টে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।

* তুলসী চা: তুলসী ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং এর প্রদাহরোধী প্রভাবও রয়েছে।

* শসা: শসাতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে যা শরীরের টক্সিন এবং ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে পিউরিনের পরিমাণও কম থাকে।

* টমেটো: টমেটোতে প্রাকৃতিক ক্ষারীয় উপাদান থাকে যা রক্তে অ্যালকালাইন বাড়াতে এবং ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।

* অ্যাপল সিডার ভিনিগার: ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে প্রতিদিন সকালে এক চামচ অ্যাপল সিডার ভিনিগার খাওয়া যেতে পারে।

* লেবুর রস: লেবুর রস গাঁটের ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

* অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

পর্যাপ্ত জল পান: ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করা জরুরি।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: প্রক্রিয়াজাত এবং ফ্যাটযুক্ত খাবার ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে, তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ পরোক্ষভাবে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোনও নতুন ওষুধ বা খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন শুরু করার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।