রাতের খাবারের নিয়ম: রাত ৮টার মধ্যে খেয়ে নিন রাতের খাবার? জানেন এর উপকারিতা কী?
ডিনার: আমাদের ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে, অর্থাৎ ৭টা বা ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। এটি করলে আমরা অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারি। শুধু ওজন কমানোই নয়, বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা থেকেও আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারি।

আজকাল অনেকেই খুব দেরিতে রাতের খাবার খান। নাইট কালচার বেড়ে যাওয়াও এর একটি কারণ। এই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে মাঝরাতের পরেও বিরিয়ানির মতো খাবার খাওয়া সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো শুনতে মজাদার হলেও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, যত দেরিতে খাবার খাওয়া হবে, স্বাস্থ্যের জন্য তত বেশি সমস্যা তৈরি হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে স্লো পয়জনের মতো স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। তাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাতের খাবার শেষ করা উচিত। দেরিতে ডিনার করার যেমন অনেক ক্ষতি আছে, তেমনই তাড়াতাড়ি শেষ করার অনেক উপকারিতাও রয়েছে।
আমাদের ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে, অর্থাৎ ৭টা বা ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। এটি করলে আমরা অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারি। অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাও দূরে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, আমাদের শরীরে কী কী পরিবর্তন আসে এবং কী কী উপকারিতা পাওয়া যায়..…
বিশেষজ্ঞদের গবেষণা অনুযায়ী, যারা তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খান, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। অন্যদিকে, প্রতিদিন দেরিতে রাতের খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এর ফলে সময়ের সাথে সাথে প্রি-ডায়াবেটিস পরিস্থিতি ডায়াবেটিসে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রাতের খাবার শেষ করা ভালো।
তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের ঝুঁকি কমে। রাতে দেরিতে খেলে শরীরের পক্ষে সময়মতো খাবার হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে চর্বি জমতে শুরু করে। রাতে ২–৩ ঘণ্টা আগে খেলে সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি সামগ্রিক মেটাবলিজম উন্নত করে।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে...
তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস হার্টের জন্য খুবই উপকারী। খাওয়ার পর শরীর ধীরে ধীরে বিশ্রামের পর্যায়ে চলে যায়। এই সময়ে খাবার পুরোপুরি হজম হওয়ায় হার্টের ওপর চাপ কমে। ফলে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (CVD) হওয়ার ঝুঁকি কমে।
দেরিতে খাবার খেলে লিভারের ওপর বেশি চাপ পড়ে। কিন্তু তাড়াতাড়ি খাবার খেলে শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। এটি ফ্যাটি লিভার এবং সিরোসিসের মতো লিভারের রোগের ঝুঁকি কমায়।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়...
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি থেমে যায়, বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি কমে। এর প্রধান কারণ হলো শরীরে হরমোনের ভারসাম্য উন্নত হওয়া।
ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে...
ঘুমানোর আগে ভারী খাবার খেলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বুকজ্বালা, পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তির মতো সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং শরীর বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়। ফলে ঘুমের মান উন্নত হয়।
শেষ কথা....
তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খাওয়া একটি ছোট অভ্যাস হলেও এর উপকারিতা অনেক। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্ট ও লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। বিশেষ করে, ভালো ঘুম এবং একটি শান্ত জীবনযাপনের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক উপায়।

