বিমানবন্দরে কিছু শব্দ বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। এমনকি ঠাট্টা বা রাগের মাথায় বলা কিছু কথাও আইনি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। সন্ত্রাসী, বোমা, বন্দুক, আগুন ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
বিমানবন্দরে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। যাত্রীদের চেকিং, তাদের লাগেজ ও পাসপোর্ট চেকিং ছাড়াও শুধু তাদের আচরণ ও মুখের কথাতেও নজর রাখা হয়। অনেক সময় অজান্তেই কিছু শব্দ বলার ফলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে বিমানবন্দরে। এমনকি ঠাট্টা বা রাগের মাথায় বলা কিছু কথাও আপনাকে আইনি জটিলতার মধ্যে ফেলে দিতে পারে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এই শব্দগুলির উপর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়, তা ইচ্ছাকৃতভাবে বলা হোক বা ভুল করে। আসুন এমন কিছু শব্দ ও আচরণের কথা জেনে নি যা বিমানবন্দরে এড়িয়ে চলা উচিত।
১। “সন্ত্রাসী” শব্দটি
এই শব্দটি সম্ভবত বিমানবন্দরে সবচেয়ে স্পর্শকাতর শব্দগুলোর মধ্যে একটি। আপনি যদি মজা করেও কাউকে “সন্ত্রাসী” বলেন বা নিজেকে এই নামে উল্লেখ করেন, তাহলে নিরাপত্তা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে। এই শব্দ ব্যবহার শুধুমাত্র সমস্যাই নয়, আপনাকে হেফাজতে নিতে পারে, জিজ্ঞাসাবাদ করা, এমনকি আপনার ফ্লাইট মিস করার কারণও হতে পারে। বিমান ছিনতাই এবং সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এই শব্দটিকে মোটেও উপেক্ষা করে না। অতএব, বিমানবন্দরে সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত কোনও শব্দ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
২। “বোমা” শব্দটি
বিমানবন্দরে “বোমা” শব্দটি বলা মানে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনা। আপনি যদি বলেন, “আমার ব্যাগে বোমা নেই”, তবুও সেটা সন্দেহজনক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। আসলে, বিমানবন্দরে যেকোনো ধরণের অস্ত্রের বিষয়ে কঠোর নিয়ম রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এই ধরনের শব্দ শুনলে অবিলম্বে তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এতে আপনার যাত্রা ব্যাহত হতে পারে, এমনকি আইনি জটিলতাও তৈরি হতে পারে।
৩। “বন্দুক” শব্দটি
বিমানবন্দরে বন্দুক বা অন্য কোনো অস্ত্রের উল্লেখ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আপনি যদি বলেন, “আমার কাছে বন্দুক নেই” বা “আমি বন্দুক নিয়ে মজা করছিলাম”, তাহলে তাতেও গুরুতর সমস্যা হতে পারে। অস্ত্র সংক্রান্ত যেকোনো মন্তব্যই নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এর ফলে গ্রেপ্তার বা জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে।
৪। “আগুন” শব্দটি
বিমানবন্দরে “আগুন” শব্দটি বললে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারে। কেউ যদি চিৎকার করে বলে “আগুন লেগেছে” – সেটা সত্য হোক বা না হোক, সেটি জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করে দিতে পারে। কারণ, আগুন কেবল মানুষের জন্যই হুমকি নয়, বিমানবন্দরের সম্পত্তি এবং বিমানেরও ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। রানওয়ে, টার্মিনাল, নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রে আগুন লাগতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসকে তৎপর হতে হয়, যা বিমানবন্দরের পরিবেশ অস্বস্তিকর করে তুলতে পারে।
৫। হুমকিমূলক বা সহিংসতা নির্দেশকারী ভাষা এড়িয়ে চলুন
বিমানবন্দর একটি সংবেদনশীল, শান্ত ও কঠোর নিরাপত্তায় ঘেরা এলাকা, এখানে প্রতিটি কথা মেপে বলতে হয়। যদি আপনি রাগ করে, অপমানজনকভাবে কিছু বলেন বা কেবল নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করেন, আর যদি আপনার ভাষা ভয়, সহিংসতা বা হুমকি বোঝায়, কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। এজন্য বিমানবন্দরে শান্ত এবং সংবেদনশীলভাবে আচরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সারাংশ
বিমানবন্দরের মজা বা রেগে গিয়ে বলা কিছু কথাও আপনার জন্য জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে, এমনকি হেফাজতেও পাঠাতে পারে। জেনে রাখুন কী সেই শব্দগুলো।


