কম দামি হেলমেটে বাঁচে না মাথা। হালকা, কম দামি হেলমেট কিনলে দুর্ঘটনার সময় তা খুলে যেতে পারে বাঁ অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে না পেরে ফেটে যাবে, বরং এতে আপনার ক্ষতিই হবে। তাই সচেতন জনতাকে হেলমেট কেনার সময়ই সতর্ক হতে বলছেন ট্রাফিক পুলিশ।
পথ দুর্ঘটনায় মাথায় বিপজ্জনক আঘাত পাওয়া থেকে সুরক্ষা দিতে পারে হেলমেট ঠিকই তবে যে কোনো হেলমেট পরে নিজেকে নিরাপদ মনে করলে ভুল করবেন। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে হেলমেট পড়া নিয়ে এত সচেতনতার সত্ত্বেও জনগণকে বোঝানো যাচ্ছে না যে কম দামি হেলমেটে বাঁচে না মাথা।
সোমবার ওয়েলিংটন মোড়ে লেনিন সরণির একটি হেলমেটের দোকানে এমনি এক সচেতন জনতার অসচেতনতা চোখে পড়ল। বছর ত্রিশের এক যুবক হেলমেট কিনতে যান ওই এলাকার একটি দোকানে। হেলমেট দেখতে চাইলে সেখানকার কর্মী জানতে চান ‘কোন কোম্পানি, হাফ না ফুল। কী দেব?’ যুবক বলেন, ‘আমি দুটো নেব, হাজারের মধ্যে করে দিন।’ ওই টাকায় যে ISI চিহ্ন দেওয়া হেলমেট হয় না, তাও ক্রেতাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন বিক্রেতা। দুটি হেলমেট দর কষাকষিতে দাম দাঁড়ায় ১৩০০ টাকা।
এই বাজারে দোকান টিকিয়ে রাখতে কম দামের হেলমেটও স্টকে রাখতে হচ্ছে দোকানদারদের। তাই রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের এক দোকানদার বলেন, ‘সকলে দামি হেলমেট কিনতে পারেন না। তাই কোয়ালিটির সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়। ফলে হালকা হেলমেট কিনে নিয়ে চলে যান অনেকে। দুর্ঘটনা ঘটলে ওই হেলমেটে কিছুই হয় না।’
পুলিশকর্মীদের অভিজ্ঞতা বলছে, কলকাতার কিছু কিছু এলাকার বাইক চালকরা একেবারে হেলমেট পড়তে চান না। কেস খেতে রাজি, তবু হেলমেট পড়বেন না। জরিমানার পরিমাণ বাড়িও লাভ হয়নি কোনো। আবার অনেকে অজুহাত দেন, ‘অনেকক্ষণ হেলমেট পরে থাকলে মাথা যন্ত্রণা করে।' অনেকে বলেন, ‘হেলমেট পরলে চুল উঠে যাচ্ছে।’ তবে পুলিশ দের বক্তব্য, শুধু হেলমেট পারতে নয়, হেলমেট কেনার ক্ষেত্রেও সচেতনতার অভাব রয়েছে জনগণের মধ্যে।
হেলমেট কেনার সময় যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে
১. সব হেলমেট এক নয়
বাজারে নানা রকম হেলমেট কিনতে পাওয়া যায়। দাম ও কার্যকারিতার মানও ভিন্ন। তাই হেলমেট কেনার আগে খুব সস্তার যে কোন দোকান থেকে হেলমেট কিনবেন না এবং হেলমেট কেনার আগে ব্যবহারবিধি ভালো মতো পড়ে নিতে হবে।
২. সঠিক মাপের হেলমেট
হেলমেট ঢিলা হলে উল্টো দুর্ঘটনার সময় ক্ষতির পরিমাণ বেশিই হতে পারে। তাই দোকানে হেলমেট কেনার সময় আগে পরে দেখুন মাথায় ঠিক মত বসছে কিনা। হেলমেট হেলে মাথার পেছনে চলে গেলে, বেশি ঢিলেঢালা হেলমেট কিনবেন না।
৩. শিশুদের হেলমেট
শিশুরা সাধারণত হেলমেট পরতে যায় না সে দিকটাও অভিভাবকদেরই খেয়াল রাখতে হবে। হেলমেট পরায় অভ্যাস গড়ে তোলা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই হাতে। হেলমেট পরতে না চাইলে মোটর বাইকে শিশুদের নিয়ে উঠবেন না। শিশুদের জন্য বিশেষভাবে আলাদা হেলমেট তৈরি হয়।
৪. হেলমেট বদলান
মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যে হেলমেট বানানো হয় তা একবার পড়ে গেলে সেই আঘাত সামলাতে পারে। তবে হেলমেটের কোথাও ফাটল দেখা দিলে বা অনেক পুরনো কোন হেলমেট হলে তা সত্তর বদলে নেওয়ার চেষ্টা করুন।


