প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো রীতি মেনে আজও দেবী দুর্গার বিদায়বেলায় লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে তাঁকে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রতি বছর সম্প্রীতির এই দুর্লভ ছবি দেখতে পাওয়া যায় মালদহের চাঁচলের মরা মহানন্দা নদীর তীরে।
মালদহে দেখা গেল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি। মালদহের চাঁচলে দেখা গেল এমনই ছবি। বিজয়া দশমীর (Vijaya Dashami) সন্ধ্যায় দেখা গেল এই ছবি। এদিন দুর্গা মন্ডপ পরিদর্শন করেন মালদা জেলা পরিষদের সদস্য। মহম্মদ সামিউল ইসলাম ও তার অনুগামীরা মন্ডপে ঘুরে দেখেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীও। মালদহের (Malda) প্রতিটি মন্ডপে তাঁরা ঘুরে দেখেন।
দুই বাংলার মিলন স্থল টাকির ইছামতি নদী। প্রতি বছর দুই বাংলার মানুষ সেখানে ভাসান দেখতে ভিড় জমায়। শুক্রবারও সেখানে দেখা গেল সেই একই ছবি। এবছর তবে দর্শনার্থীদের ইছামতীতে নামতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আগেই ইছামতীতে বিসর্জন নিয়ে বৈঠক হয়। কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিসর্জন দেখতে গিয়ে তাই হতাশ হয়েই ফিরতে হল দর্শনার্থীদের।
দশমীতেও পার পেল না বাংলাদেশের মন্দির, নোয়াখালির ইসকন মন্দিরে তাণ্ডবলীলা চালালো দুষ্কৃতিরা । এমনকি মন্দিরে উপস্থিত ভক্তদের মারধর করা হয়, একজন ভক্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ইসকন মুখপাত্র।
দেখতে পুজো শেষ, উমাকে বিদায় জানাতে ঘাটে ঘাটে ভিড়। কলকাতার (Kolkata Ganges ghat) ঘাটে ঘাটে ভাসানের ভিড় দেখা গেল। শুক্রবার সকাল থেকেই ভাসানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। সকাল থেকেই সিঁদুর খেলা (Sindur Khela) শেষে কলকাতার ঘাটে ভাসন শুরু হয়ে যায়। তার মধ্যেই নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি মাথায় করেই বাবুঘাটে চলে পুজোর ভাসান। করোনা বিধি মেনেই এবার পুজোর ভাসান।
কৃত্রিম উপায়ে মা দুর্গার ভাসানের ব্যবস্থা কলকাতা পৌরসভার। সরাসরি দুর্গা প্রতিমা গঙ্গাবক্ষে বিসর্জন না দিয়ে গঙ্গার পাশে একটি স্থানে হোস পাইপের মাধ্যমে মাকে পুরোপুরিভাবে নিরঞ্জন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। গঙ্গার পাশে একটি হোস পাইপ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে যার মাধ্যমে দুর্গা প্রতিমা পুরোপুরিভাবে জলের মাধ্যমে মিশ্রিত করে দেওয়া হবে এবং সেই জল একটি ট্যাংকে জমা হবে বলে জানান ফিরহাদ হাকিম। পরবর্তীকালে তা হাই ড্রেন দিয়ে বার করে দেওয়া হবে। গঙ্গার দূষণ রোধ করতেই এই পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। এই ভাবে ভাসান তবে বাধ্যতামূলক নয়।
পুজো শেষে বিষাদের সুর। মন্ডপে মন্ডপে মায়ের বরণ শেষে সিঁদুর খেলা। পুরুলিয়ায় ছৌনাচ আর সিঁদুর খেলায় বিদায় জানান হয় মা‐কে। সেখানেই দেখা গেল এক অদ্ভূত ছবি। শিশুদের উপর দিয়ে পালকিতে নিয়ে যেতে দেখা গেল নবপত্রিকা। মায়ের আশির্বাদ এবং করোনা মুক্ত হওয়ার আশায় এমনটা হয়েছে। মাটিতে সেখানে গড়াগড়ি দিতে দেখা গেল শিশুদের। মায়ের কৃপা লাভের আশাতেই এমনটা করতে দেখা গেল।
শুভশ্রীর ছবির বিখ্যাত গান 'ঢাকের তালে কোমর দোলে'। সেই গানের তালেই কোমর দোলাতে দেখা গেল ইউভানকে। সঙ্গে তাল মেলালেন শুভশ্রী। পুজোয় আনন্দে হাতে ঢাকের কাঠি নিয়েও দেখা গেল ছোট্ট ইউভানকে। ঢাক বাজানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে দেখা গেল তাকে। তার সঙ্গেই দেখা গেল মা শুভশ্রীকেও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের ভিডিও শেয়ার করলেন রাজ চক্রবর্তী।
বসিরহাট টাকি পুবের রাজবাড়ির পুজো প্রায় ৩০০ বছরের। এখানকার মায়ের ভাসানের রয়েছে বিশেষত্ব। মা এখানে ২৪ বেয়ারার কাঁধে চেপেই কৈলসের উদ্দেশে রওনা দেন। দশমীর দিন এখানে মা‐কে কচুর শাক আর পান্তা ভাত ভোগ দেওয়া হয়। কচুর শাক, পান্তা ভাত ছাড়াও থাকে আরও নানান ভোগ। শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে ইছামতি নদীতে নিয়ে গিয়ে মায়ের বিসর্জন হয়। রাজবাড়ির মায়ের ভাসানের পরই এখানে অন্যসব ঠাকুর ভাসান হয়।
প্রথা মেনেই শোভাবাজার রাজবাড়িতে উমার বিদায় পর্ব। শোভাবাজার রাজবাড়িতে ১০৩ বছর ধরে চলে আসছে এই একই নিয়ম। বেলা ১২ টা ৫০ মিনিট নাগাদ শুরু হয় প্রস্তুতি। ঠাকুর দালান থেকে মা‐কে বের করে আনা হয়। এখানে দরজার বাইরে থেকে নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানো হয়। আরও একটি নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানো হয় ভাসানের সময়। এবছরও তার অন্যথা হল না সেখানে। দুটি নৌকার মাঝে মা দুর্গাকে রেখে এখানে মায়ের ভাসান হয়।