ফুটবল জ্বর তিলোত্তমায়, উত্তর কলকাতার সরু লেন জুড়ে বিশ্বকাপের উদযাপন, দেখে নিন ছবি
কলকাতা মানেই উন্মাদনা, কলকাতা মানেই উল্লাস, কলকাতা মানেই প্রাণের শহর, কলকাতা মানেই ফুটবল। বিশ্বকাপে না থাকলেও ফুটবল তো সব খেলার সেরা হয়েই থাকবে। উত্তর কলকাতার সরু লেনেই যেন উঠে এসেছে এক টুকরো কাতার।
- FB
- TW
- Linkdin
বিশ্বকাপে না থেকেও রয়েছে ভারত। কলকাতার অলিতে গলিতে তাকালেই দেখা যায় দেখা যাবে মারাদোনা অথবা মেসি বা হয়েতো রোনাল্ডোর ছবি। দেখা ইতিমধ্যেই দুই রঙে দ্বিধা বিভক্ত হয়েছে গোটা শহর। কোথাও সবুজ-হলুদ, তো কোথাও আবার নীল-সাদা দলের ভক্তদের ভিড়।
ফুটবল জ্বরে ভাসছে কোলকাতা। সূদূর কাতারে আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপে নিজের প্রিয় দলের জন্য কলকাতায় বসেই প্রার্থনা করছেন হাজার হাজার দর্শক।
ফুটবল নিয়ে কলকাতার আবেগের চিহ্ন দেখা যায় শহরের বুকেই। গোটা শহর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দিয়েগো মারাদোনা, মেসি, রোনাল্ডো, নেইমারদের ছবি। সার দিয়ে ঝুলছে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার পতাকা।
কলকাতার আকাশে বাতাসে এখন ফুটবল। উত্তর কলকাতার একটা গোটা গলি সেজে উঠল ফুটবলের জন্য। দেওয়াল থেকে রাস্তা সর্বত্রই ফুটবল। ছোট থেকে বড় সকলেই মেতেছে ফিফা জ্বরে।
উত্তর কলকাতার সরু লেনের মধ্যেই ফুটে উঠেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ছবি। গোটা একটা গলি জুড়ে শুধু ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা। দিয়েগো পেলে, শুধুই ফুটবল।
রাস্তাজুড়ে আঁকা প্রিয় দলের পতাকা, লোগো। দেওয়ালে দেওয়া অসাধারণ গ্রাফিতি। মাথার উপরে সারি সারি পতাকা। নীল সাদা আর সবুজ হলুদ। এককথায় ফুটবলে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা গলিটিকে।
প্রিয় দলের জার্সি পরে ফুটবল পায়ে মেতেছে কচিকাঁচা থেকে মাঝবয়সীরা। কান পাতলেই শোনা যাবে ফুটবলের গান। আবেগ ফেন আর বাধ মানে না।
প্রিয় দলের জার্সি পরে ফুটবল পায়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে পারে নতুন প্রজন্ম। সেসব গলি দেখলে আজ চেনার উপায় নেই। এ যেন একটুকরো ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনাই।
শুধু গ্রাফিতি নয় এক দিকের দেওয়াল জুড়ে লাগানো বিশ্বকাপের ইতিহাস। কোন সালে কোন ম্যাচ খেলা হয়েছিল। কোন দল জিতেছিল যাবতীয় তথ্য মিলবে সেখানে।
দেওয়াল জুড়ে দেখা আঁকা দিয়েগো মারাদোনার ছবি। রোনাল্ডোর ছবি। পেলে মেসিদের ছবি। ফুটবলের ঈশ্বরের কাছে তাঁরাও প্রার্থনা করছে নিজের দলের জন্য।
ফুটবল যে শুধু একটা খেলা তা তো নয়। ফুটবল একটা আবেগ। সে ঘরের মাঠে ডার্বিই হোক বা সূদূর কাতারের বিশ্বকাপ। ফুটবলের সঙ্গে বাঙালির আত্মার টান।
ফুটবল মানেই বাঙালির রক্তে। ফুটবল বাঙালির আবেগ। দিনের শেষে প্রিয় দলটুকুকে আঁকড়ে বাচে হাজার হাজার মানুষ।
কলকাতা জুড়ে এই উন্মাদনা যেন গোটা বিশ্বকাপের আনন্দকে আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রথম ম্যাচে হারের পর এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ম্যাচে কামাল দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে মাঠে নেমে ৬৪ মিনিটে মাটি ঘেষে দূরন্ত গোল মেসির। ৮৬ মিনিটে অসাধারণ একটি গোল করেন এনজো ফার্নান্ডেজ। এই দুটি গোলই অনেকটা এগিয়ে দেয় দলকে।
বিশ্বকাপে গ্রুপের দুটি ম্যাচের পর আর্জেন্টিনার হাতে তিন পয়েন্ট। এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থানে রয়েছে পোল্যান্ড। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে জিতে তিন পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা। মোট দুটি ম্যাচে মেসিদের গোল সংখ্যা ৩। গোল খেয়েছে ২।
২০২২ সালে কাতারের স্টেডিয়ামে ফের 'জোগো বোনিতো' ফিরিয়ে আনল ব্রাজিল। যার অর্থ সুন্দর ফুটবল। কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিলের উদ্বোধনী ম্যাচে সঠিক অর্থের সেই সুন্দর ফুটবল দেখা গেল।
৯০ মিনিট ধরে হলুদ জার্সিধারীদের দাপটে দিশেহারা হয়ে গেল সার্বিয়ার রক্ষণ। গোটা ম্যাচে একটাই দল ক্রমাগত আক্রমণ করে গেল। রিচার্লিসনের বাইসাইকেল কিক অবাক করেছে গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের। দাপট দেখিয়েছেন নেইমার, স্যান্দ্রো, ক্যাসেমিরোক্যাসেমিরো, ভিনিসিয়াস জুনিয়ররাও।
রিচার্লিসনের বাইসাইকেল কিক মুগ্ধ করেছে গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তুই এতেই সন্তুষ্ট নন রিচার্লিসন। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয় গোল করেও আনন্দে মাতেননি তিনি। বিশ্বকাপ জেতার আগে কোনও মতেই থামতে রাজি নন তিনি।