প্রাথমিক টেটের ভুল প্রশ্নের উত্তরে মিলবে নম্বর, বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
Cal HC On WB TET: ২০১৭ ও ২০২২ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা ও তার ভুল প্রশ্নের মামলায় এবার বড় নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। কী বলল আদালত? বিশদে জানতে দেখুন সম্পূর্ণ ফটো গ্যালারি…

টেটে প্রশ্ন ভুলের মামলায় বড় নির্দেশ
এবার ২০১৭ ও ২০২২ সালের প্রাথমিকের টেটে প্রশ্ন ভুলের মামলায় বড় নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৭ এর টেটে একটি মাত্র প্রশ্ন ও তার উত্তর ভুল ছিল। তার জন্য সমস্ত অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে যাঁরা এর জন্য কোনও নম্বর পাননি, তাঁদের এক নম্বর করে দেওয়া হবে। যাঁরা এই এক নম্বর পেয়ে পাশ করবেন, তাঁরা ২০২৫ সালের টেটের বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন বলে নির্দেশ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
কী বলছে আদালত?
জানা গিয়েছে, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে কমিটির সদস্যদের নাম ব্যতীত সাত দিনের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে বলেও নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি বসু। তবে ২০২২ সালের টেটে কোনও প্রশ্ন ও উত্তর ভুল নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে। আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে কমিটির সদস্যদের নাম ছাড়া রিপোর্ট ওয়েবসাইটে আপলোডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু। তবে, ২০২২ সালের টেটের বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ বেঞ্চে আবেদন করা যাবে বলেও নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাই ২০২২ সালের টেটের প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় একাধিক প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ
সূত্রের খবর, ২০১৭ ও ২০২২ প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় একাধিক প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০১৭ সালের টেটে ২৩টি এবং ২০২২ সালের টেটে ২৪টি প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগে মামলা হয় আদালতে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে আদালত। এবং কমিটির থেকে রিপোর্ট তলব করে আদালত। দীর্ঘদিন মামলা চলে। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞ কমিটি আদালতে রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্ট দেখে গত শুক্রবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, যাঁরা আদালতে এসেছেন এবং যাঁরা আদালতে আসেননি, তাঁদের প্রত্যেকে দুই টেটে সমস্ত ভুল প্রশ্নের জন্য নম্বর পাবেন। কোন পদ্ধতিতে নম্বর দেওয়া হবে, ঠিক কত নম্বর দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে আজ তথা সোমবার আদালতে জানাতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
আদালতে জোড়া রিপোর্ট পেশ
সোমবার বিশেষজ্ঞ কমিটির জোড়া রিপোর্ট দেখেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পর্ষদের আইনজীবী আদালতকে জানান, ২০১৭ টেটে একটি মাত্র প্রশ্ন ও তার উত্তর ভুল রয়েছে বলে রিপোর্টে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। বুকলেট কোড 'সিএক্সএন'- এর ১২১ নম্বর পরিবেশ বিজ্ঞানের (ইভিএস) প্রশ্নের সমস্ত উত্তর ভুল ছিল। তাই ২০১৭ টেটে অনুত্তীর্ণদের মধ্যে যাঁরা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অথচ কোনও নম্বর পাননি, তাঁদের এক নম্বর করে দেওয়া হবে। তাতে যাঁরা পাশ করবেন, তাঁদের ২০২৫ প্রাথমিকে নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে পর্ষদের ওয়েবসাইটে আপলোড করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে কমিটির সদস্যদের নাম বাদ দিয়ে রিপোর্ট আপলোড করতে হবে বলে নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি বসু।
আদালতের রায়ে হতাশ ২০২২ এর টেট প্রার্থীরা
অন্যদিকে ২০২২ সালের টেটের পরীক্ষার্থীদের হতাশ হতে হলো। সোমবার কারণ, ২০২২ সালের টেটে কোনও প্রশ্ন ও উত্তর ভুল নেই বলে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে। আগামী ২৬ তারিখের মধ্যে কমিটির সদস্যদের নাম ছাড়া রিপোর্ট পর্ষদের ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেইসঙ্গে ২০২২ টেটে প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে এই রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ বেঞ্চে আবেদন করা যাবে বলেও নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি বসু।

