সংক্ষিপ্ত
গত বছর গঙ্গাসাগর থেকে পুণ্যার্থীদের আনা ভেসেলগুলিকেও স্যানিটাইজ করা হয়। যেসব পুণ্যার্থীর মুখে মাস্ক নেই, তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
গত দু বছর ধরে করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে বন্ধ ছিল গঙ্গাসাগরের জমায়েত। যদিও গত বছরে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই। কোভিড বিধি নিষেধকে উপেক্ষা করেই গঙ্গাসাগরে জমায়েত হয়েছিল। উল্লেখ্য, প্রতিবছর গঙ্গাসাগরে স্নান করতে এবং কপিল মুনির আশ্রমে পুজোর দেওয়ার জন্য ভিড় করেন লক্ষাধিক পুণ্যার্থীরা।
বুধবার নবান্নতে বসে এই বিষয়ে বেশ কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'মেলায় ২২৫০টি সরকারি বাস, ৫০০ বেসরকারি বাস চালু থাকবে। ৪টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ এই সময়ে চলবে। এক টিকিটে গঙ্গাসাগরে যাওয়া-আসা করা যাবে। ১০টি ফায়ার স্টেশন, ২৫টি দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন থাকবে'। ৮ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে এবছরের গঙ্গাসাগর মেলা। কুম্ভস্নান শুরু হচ্ছে ১৪ তারিখ ৬.৫৩ মিনিটে। পুণ্যস্নানের সময় ২৪ ঘণ্টা।' এছাড়াও পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত বছর গঙ্গাসাগর থেকে পুণ্যার্থীদের আনা ভেসেলগুলিকেও স্যানিটাইজ করা হয়। যেসব পুণ্যার্থীর মুখে মাস্ক নেই, তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সবাই যাতে কোভিডবিধি মেনে চলে, সেজন্য মাইকে অনবরত প্রচার করে চালিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেজন্য সকাল থেকেই মাইকে চলেছে প্রচার। স্যানিটাইজ করা হয়েছিল মেলা চত্বর, সমুদ্র সৈকত।
এদিকে, গত বছর গঙ্গাসাগরে পূণ্য স্নান করেন ৩ লক্ষ ভক্ত। পাশাপাশি কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেন ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৬২ জন। এদিকে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগরের ই-স্নান এবং ই-দর্শনে জোর দেয়। পরিসংখ্যান জানায় এবারে ই-স্নান করেন ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৬০ জন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু থেকেই কপিল মুনির আশ্রম, মেলা চত্বরে দফায় দফায় চলে স্যানিটাইজেশনের কাজ। লকগেট তৈরি করে মন্দির চত্বরে প্রতিবারে ৫০ জন করে ঢুকতে দেওয়া হয়। অন্যদিকে করোনা বিধি মানতে সারা সময়েই মেলা চত্বরে চলে মাইকিং। যদিও তারপরেও করোনা বিধি মানতে যথেষ্ট অনীহা দেখা যায় ভক্তদের মধ্যে। এমনকী সাধু-সন্তদের বিরুদ্ধেও বারেবারে করোনা বিধি উলঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। তবে এই ক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো শুরু থেকেই কার্যত গঙ্গাসাগর মেলার বিপক্ষে ছিল চিকিৎসক মহল। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টে মেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়।