সংক্ষিপ্ত

শত বাধা বিপত্তির মুখেও সোজা শিঁড়দাড়ায় ওঁদের মুখে একটাই কথা,'নিয়োগ চাই'। কখনও প্রকৃতির চরা রোদ, কখনও বা রাজনৈতিক উত্তাপ। প্রতিকূলতার মধ্যেও এতটুকু টলেনি আন্দোলন। শুক্রবার ৬০০ দিনে পা রাখল এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন।

 

ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খোলা আকাশের তলায় অতিবাহিত ৬০০ দিন। ঘর ছেড়ে, স্বজন ছেড়ে দিনের পর দিন কেটেছে রাস্তায়। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ম্লান হয়ে এসেছে শহরজোরা উৎসবের আলো। শত বাধা বিপত্তির মুখেও সোজা শিঁড়দাড়ায় ওঁদের মুখে একটাই কথা,'নিয়োগ চাই'। কখনও প্রকৃতির চরা রোদ, কখনও বা রাজনৈতিক উত্তাপ। প্রতিকূলতার মধ্যেও এতটুকু টলেনি আন্দোলন। শুক্রবার ৬০০ দিনে পা রাখল এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন।

বিগত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে কয়েকশো যুবক যুবতী। তাঁদের কারও কোলে ছোট বাচ্চা, কারোর বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা। তবু হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে আজ ৬০০ দিন ধরে লড়াই করছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। দাবি 'নিয়োগ চাই'। দীর্ঘ সময়ের এই আন্দোলনে মিলেছে ভরসা, মিলেছে প্রতিশ্রুতি, আশ্বাসও। কিন্তু দাবি পূরণ হয়েনি। ক্লান্ত শরীরে, চোখে মুখে হতাশা নিয়ে তাই প্রত্যেকের মুখে এখনও একটাই স্লোগান, 'নিয়োগ চাই, নিয়োগ চাই'। বাড়ি ঘর ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন এসে শামিল হয়েছে এই লড়াইয়ে। হকের চাকরির দাবিতে আজ ৬০০ দিন ধরে ঘর ছাড়া তাঁরা। রাজ্যের উৎসব-ব্যাসন থেকে কার্যত ব্রাত্য নৈরাজ্যের এই বাসিন্দারা।

শুক্রবার ৬০০ তম দিনে পা রাখল এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন। এদিন ফের নিয়োগের দাবিতে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠল গান্ধীমূর্তির পাদদেশ। আর কতদিন? কবে সুরাহা হবে এই সমস্যার? আর কতদিন এইভাবেই পথে বসে আন্দোলন চালাবেন চাকরিপ্রার্থীরা? আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট জবাব,'দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবেই।' শুধু তাই নয় আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে বলেও জানাচ্ছে তাঁরা। শনিবার রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত মিছিলের পরিকল্পনাও রয়েছে।

চাকরি না মিললেও প্রতিশ্রুতি মিলেছে বহুবার। কখনও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে, কখনও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলেছে দফায় দফায় বৈঠক। বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি মিললেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুজোর দিন কালো পোশাক পড়ে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে যান কৌশিক সেন, রেশমি সেন ছেলে ঋদ্ধি সেন ও সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মিষ্টির প্যাকেটও তুলে দেন চাকরিপ্রার্থীদের হাতে। আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের পাশে থাকার বার্তাও দেন তিনি।

এদিন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে অভিনেতা কৌশিক সেন বললেন,"পৃথিবী উলটে গেলেও এরা নিয়োগ পাক, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমরা দাবিটা পেশ করব। তদন্ত তদন্তের মতো হোক, দোষীরা শাস্তি পাক।" অভিনেতা রেশমি সেন বললেন,"আজকে আমার মনে হয় রঙিন পরে এসে ওদের সামনে দাঁড়ানোটা খুব নিজেদেরই খুব ছোট মনে হবে, কারণ ওনাদের দিনগুলি তো রঙিন হয়নি, ওনাদের দিনগুলি অন্ধকারে কালো, প্রদীপের নীচে অন্ধকার হয়েই থেকে গেছে।"

ঝলমলে আলোয় আলোকিত গোটা শহর, দুর্গাপুজো থেকে কার্নিভাল উৎসবে মেতেছে রাজ্যবাসী। কিন্তু এত আলোর মধ্যেও অন্ধকারে থেকে গিয়েছে ওঁদের জীবন। টানা ৫৭৪ দিন অবস্থান বিক্ষোভের পরেও ন্যায় বিচার পায়নি চাকরিপ্রার্থীরা। হকের চাকরির দাবিতে দিনের পর দিন ধর্নামঞ্চে তাঁরা। আর কতদিন এভাবেই হকের চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে চাকরি প্রার্থীদের?

 

আরও পড়ুন - 

১১ দিনের লড়াই শেষ, ডেঙ্গির কাছে হার মানলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসক অনির্বাণ হজরা

তদন্তে কি উঠে আসছে নতুন কোনও গুরুত্বপূর্ণ নাম? সিবিআই-এর কাছে প্রশ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

ধর্ষণের বিচার করার জন্য ডেকে প্রেমিককে সঙ্গে হাত মিলিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ, কাঠগড়ায় তৃণমূলের কাউন্সিলর