সংক্ষিপ্ত

বৈঠকের দ্বিতীয় দিন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনের সময় মোর্চা গঠন সঠিক হলেও তা কখনওই দীর্ঘস্থায়ী জোট হতে পারে না। যদি দীর্ঘস্থায়ী জোটের ভাবনা থাকে তাহলে তা সঠিক হবে না। আর তাঁদের সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে জোটের ভবিষ্যৎ। 

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জোটবদ্ধ হয়েছিল সিপিএম, কংগ্রেস ও আইএসএফ। তবে জোট করে লড়লেও রাজ্যে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি সংযুক্ত মোর্চা। বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন জিততে পারেনি বাম ও কংগ্রেস। মাত্র ১ টি আসন দখল করতে পেরেছে জোট শরিক আইএসএফ। ভাঙড়ে তাঁদের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তবে বাম ও কংগ্রেসের হাত পুরোপুরি শূন্য। রাজ্যে সিপিআইএম-এর শূন্য হওয়ার পর রাজ্য কমিটিতে কৌশল নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন অনেকেই। এদিকে ভোট মিটে যাওয়ার পর জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। আর এবার তা নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের নেতারা।  

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দক্ষিণের একাধিক রাজ্যের প্রতিনিধিরা এই জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটের কারণ জানতে চান তাঁরা। এদিকে, রাজ্যে বাম শূন্য হওয়ার জন্য কংগ্রেসকেই দায়ি করেছেন একাধিক রাজ্য নেতা। তাঁদের মতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা ঠিক হয়নি। এই বৈঠকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের নেতাদের। 

তবে বৈঠকের দ্বিতীয় দিন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনের সময় মোর্চা গঠন সঠিক হলেও তা কখনওই দীর্ঘস্থায়ী জোট হতে পারে না। যদি দীর্ঘস্থায়ী জোটের ভাবনা থাকে তাহলে তা সঠিক হবে না। আর তাঁদের সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে জোটের ভবিষ্যৎ। 

আরও পড়ুন- পদ্মা আর প্রবল বর্ষণে বাঁধ ভেঙে বন্যা, আচমকা দিশেহারা মুর্শিদাবাদবাসী

আরও পড়ুন, 'ত্রিপুরাতে নাটক করতে যাচ্ছেন TMC নেতারা', ঘাটালে গিয়ে বন্যা ইস্যুতেও বিস্ফোরক দিলীপ

বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সম্পর্ক একেবারেই ভালো ছিল না। একধিকবার প্রকাশ্যেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল দু'পক্ষই। এই সব বিষয় নিয়েই কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের নেতাদের। এমনকী, জোট করার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা তাও জানতে চান অন্য রাজ্যের নেতারা। কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে এ নিয়ে সওয়াল করেছিলেন মৃদুল দে ও সুজন চক্রবর্তী। আলিমুদ্দিন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে জোটের প্রয়োজন কেন ছিল তা নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তাঁরা। এমনকী, কমিটির নেতাদের বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁদের। 

আরও পড়ুন- কাটল জট, অবশেষে ধর্মঘট প্রত্যাহার ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশনের

বাংলায় বামেদের এই ভরাডুবি নিয়ে অন্য রাজ্যের নেতাদের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে রাজ্যের নেতাদের। অনেকের প্রশ্ন, এমন জোট করা হল কেন যা কাজেই লাগল না। অন্য রাজ্যের নেতাদের উপদেশ, বৃহত্তর বাম ঐক্যের ডাক দিয়ে সবাইকে একজোট করে ভোটে লড়াই করা উচিত ছিল। পাশাপাশি বিজেপি ও তৃণমূলকে এক সারিতে বসানোও একেবারেই ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। রাজ্যে বাম শূন্য হওয়ার জন্য এই কারণকেও দায়ি করেছেন তাঁরা। এদিকে ভোটের পরই 'বিজেমূল' তত্ত্ব ভুল ছিল বলে স্বীকার করেছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। 

'আরও পড়ুন, Tripura: 'যা পারেন করুন', বিপ্লবকে চ্যালেঞ্জ, আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে আজ ত্রিপুরায় অভিষেক

তবে ভোটের সময় জোটের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিলেও তা কখনওই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তাঁদের মতে, এই জোটকে শুধুমাত্র নির্বাচনী সমঝোতা হিসেবেই দেখতে হবে। কখনই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে সিপিএম থাকবে বলে এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। আজ বৈঠকের শেষ দিনে সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

YouTube video player