সংক্ষিপ্ত
দুর্নীতিকাণ্ডে যখন শাসকদলের সব নেতানেত্রীদের দিকে বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের সুর, তখন দলের মধ্যে থেকেই সৌগত রায়ের বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা।
দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলের দিকে যখন বারবার আঙুল তুলছেন বিরোধীরা, তখন দলেরই প্রাক্তন মহাসচিবকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কোটি কোটি টাকার বান্ডিল উদ্ধার প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘সারা ভারতেই এই রকম দুর্নীতি কম হয়েছে। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ অনেক দিন জেলে ছিলেন। কিন্তু লালুর কাছ থেকে এত নোট তো বার হয়নি। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন সুখরাম। তাঁর ওখান থেকে দু-তিন-চার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। এই ভাবে তো কোথাও কখনও দেখা যায়নি।’’
আপাতত ঘাসফুল শিবিরের কোনও নেতাই বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ নেতা সৌগত রায়ের করা মন্তব্য সম্পর্কে মুখ খুলতে চাইছেন না। রাজ্য স্তরের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘উনি অস্বস্তিতে আছেন বুঝতে পারছি। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে বলে দলের অস্বস্তি যে বাড়াচ্ছেন, সেটাও ঠিক। তবে উনি দলের প্রবীণ নেতা। তাই আমি এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না। যা বলার দলনেত্রী বলবেন।’’ সৌগত রায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অন্দরে কী বার্তা দিয়েছেন, তা অবশ্য এখনও অপ্রকাশ্যে।
শুধু লালু প্রসাদ কিংবা সুখ রামের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তুলনা করাই নয়, উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি টাকা নিয়েও সৌগতর মন্তব্য বেশ ঝাঁঝাল। তিনি বলেন, ‘‘৫০ কোটি টাকা! টাকার ছবি না দেখলে তো বিশ্বাসই করতে পারতাম না। দেখলাম তো ছবি। এই যে টাকার পাহাড়টা দেখা গিয়েছে, এটা দেখার পরে লোকের কাছে কী জবাব দেব আমরা? এই বিড়ম্বনা! এই লজ্জা তো আমাদের আছে।’’ তবে, নিজের মুখে প্রাক্তন দলনেতার সমালোচনা করলেও তার সঙ্গে সৌগত এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এ বিষয়ে বিরোধী দলের সমালোচনা শুনতে তিনি নারাজ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের লোক, তৃণমূলের সঙ্গেই থাকব, আর তৃণমূলের সবাইকে ‘চোর’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে, আমরা প্রতিরোধ করব।’’
শুক্রবার খড়দহ বিধানসভার বিলকান্দায় তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “বিধানসভায় আমি বলেছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কোর্ট থেকে পরিষ্কার হয়ে আসতে হবে। নাহলে, দল কাউকে স্বীকার করবে না। চোর প্রমাণিত হলে, দল তাকে সহ্য করবে না।” দুর্নীতিকাণ্ডে যখন শাসকদলের সব নেতানেত্রীদের দিকে বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের সুর, তখন দলের মধ্যে থেকেই সৌগত রায়ের বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা।
আরও পড়ুন-
২০২২-এ এসে দ্বিতীয় বছরে পা রাখলো ডেইলিহান্ট শারদ সম্মান, শহর পেরিয়ে জেলার পুজোকেও পুরস্কার প্রদান
অনুব্রতর রান্নাঘরেও এবার সিবিআইয়ের নজর, সরকারি অফিসারদের কঠিন জেরার মুখে নেতার রাঁধুনি
৫৫ কোটি টাকার সোনা! বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মারুতি গাড়ি আটকাতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ কর্তাদের