Madhyamik Result 2025: শুক্রবার সকাল থেকেই জেলায়-জেলায় খুশির হাওয়া। কারণ ৭০ দিন পর অবশেষে আজ প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। জানুন আরও বিশদে…    

Madhyamik Result 2025: শুক্রবার সকাল থেকেই জেলায়-জেলায় খুশির হাওয়া। কারণ ৭০ দিন পর অবশেষে আজ প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। গত বছরের মত এবছরও মাধ্যমিকের ফলাফলের তালিকায় জেলার জয়জয়াকার। মেধাতালিকায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে কলকাতা (Kolkata MP Result Update)। তবে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম দশে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা কী হতে চাইছেন ভবিষ্যতে জানব...

মাধ্যমিক পরীক্ষার এবছর প্রথম স্থান অধিকার করেছে রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের ছাত্র অদ্রিত সরকার। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬ (Madhyamik Result 2025)। ভবিষ্যতে ডাক্তারি লাইন নিয়ে এগিয়ে যেতে চান রায়গঞ্জের এই কৃতী ছাত্র। যদিও ভবিষ্যতে অন্য কোনও বিষয়ে পড়াশোনার আগ্রহ জন্মালে সেটা নিয়ও পড়তে চান অদ্রিত সরকার। তিনি বলেন, ''অভাবনীয় অনুভূতি। বাবা-মার একটা স্বপ্ন ছিল। সারা বছর যা পরিশ্রম করেছি, তার ফল পেয়েছি। ভাল ফল করব সেটা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু, রাজ্যের মধ্যে প্রথম হব, সেটা খুবই অপ্রত্যাশিত। নাম ঘোষণার পর থেকে বাড়িতে ফোন এসেই যাচ্ছে।''

মাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে অনুভব বিশ্বাস (রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, বেলুড়) এবং সৌম্য পাল। তাঁদের দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪। মাধ্যমিকে দ্বিতীয় অনুভব ভালোবাসেন গোয়েন্দা গল্পের বই পড়তে। অন্যদিকে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় সৌম্য পাল পড়াশোনার অবসরে গানবাজনা নিয়েই থাকতে ভালোবাসেন। তবে দুজনই বিজ্ঞান (Science) শাখায় উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে চায়। অনুভবের ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার। সৌম্য ইঞ্জিনিয়ারিং বা গবেষণার দিকে এগিয়ে যেতে চায়।

মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান দখল করেছে বাঁকুড়ার (Bankura News) ঈশানী চক্রবর্তী। মা পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। সারাদিন মেয়েকে সেভাবে সময় দিতে না পারলেও পড়াশোনায় কোনও ঘাঁটতি রাখেনি মাধ্যমিকে তৃতীয় ঈশানী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। বাঁকুড়ার কোতুলপুর সরোজবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ঈশানী। পড়াশোনার ফাঁকে গানবাজনা ও আঁকতে ভীষণ ভালোবাসে ঈশানী। তবে গতানুগতিক ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, বড় হয়ে ভালো গবেষক হতে চান বাঁকুড়ার ঈশানী।

মা মারা গিয়েছে ছোটোবেলায়। তারপর থেকেই বাবা ফেলে চলে গিয়েছে। মামাবাড়িতেই মামা-মাসিদের কাছে মানুষ। মহম্মদ সেলিম। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম নিরল হাইস্কুলের ছাত্র মহম্মদ সেলিম। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। রাজ্যের মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে মেধাবী এই পড়ুয়া। এদিন মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেলিম বলেন, ''র‌্যাঙ্ক করব কোনও দিনই ভাবিনি। শুধু পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। তারপর যখন টিভিতে শুনলাম আমি ভাবতেই পারছি না।'' তবে শুধু সেলিম নয়, তাঁর এই সাফল্যে খুশির হাওয়া মামাবাড়িতে। গ্রামের লোকজন এসে মিষ্টি খাইয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে। তবে সেলিমের ইচ্ছা আরও ভালো পড়াশোনা করে বড় হয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ। তার এই সাফল্য সে মামা ও স্কুলের শিক্ষকদের উৎসর্গ করেছেন বলে জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম।

অন্যদিকে মাধ্যমিকে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন-চারজন। সিনচ্যান নন্দী (গৌরহাটি হরদাস ইনস্টিটিউশন), চৌধুরী মহম্মদ আসিফ (কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন), বিশ্বজিৎ ঘোষ, এবং সৌমিত্র করণ (নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন)। এঁদের প্রত্যেকেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে প্রথম দশের মধ্যে তিনজন রয়েছেন। পঞ্চম স্থানে আছেন দুজন। চৌধুরী মোহাম্মদ আসিফ, সোমতীর্থ করণ। দুজনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। অষ্টম স্থানে রয়েছেন পুষ্পক রত্নম। পুষ্পক বিহারের বাসিন্দা। আগামী দিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই সে। তার ভালো রেজাল্টের পিছনে পরিবার এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অনেক অবদান রয়েছে বলে জানিয়েছে সে। নিজের এই সাফল্যে যতটা উচ্ছ্বসিত তেমনই কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ততটাই ভারাক্রানন্ত তাঁর মন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বদলা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পুষ্পক। কাশ্মীরে হামলায় নিন্দায় বদলা নেওয়া উচিত বলে জানায় কৃতী এই মেধাবী ছাত্র।

অভ্রদীপ মন্ডল। ষষ্ঠ স্থান অধিকারী। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০। সারাদিনে ১০/১২ ঘন্টা পড়াশুনা। প্রিয় চেস খেলা ও গান করা। গান শেখেও। ভবিষ্যতে সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করার ইচ্ছা। ডাক্তার হতে চায়। বাবা রামকৃষ্ণ মন্ডল। গ্রীনপার্ক শিক্ষাসদন হাইস্কুল। বাংলার শিক্ষক। মা গৃহবধূ। কাশ্মীরের ঘটনা অভ্রদীপের কাছে মানবতা বিরোধী। দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে বলে জানায় অভ্রদীপ। এর পাশাপাশি শিক্ষকদের নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তার দ্রুত সমাধান হোক ও যোগ্যদের চাকরি যাতে না যায় সেই মত জানায় অভ্রদীপ।

এছাড়াও মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৭ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য নবম শান্তিপুর মিনিউসিপাল স্কুলের ছাত্র প্রজ্জল দাস। শুক্রবার রাজ্যে মাধমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আর সেই তালিকা প্রকাশ পাওয়ায় পরই জানা যায়, রাজ্যের মধ্যে মোট ৬৮৭ নম্বর পেয়ে নবম হয়েছেন শান্তিপুর বাইগাছি সেন পাড়ার বাসিন্দা প্রজ্জল দাস। বাবা পেশায় শান্তিপুর কলেজের অশিক্ষক কর্মী, মা সরকারি নার্স। আর এই খবর পাওয়ার পরই স্বাভাবিক ভাবেই খুশি প্রজ্জল ও তার পরিবার। পাশাপাশি রাজ্যে নবম হয়ে স্কুলের মুখ উজ্জল করায় খুশির হাওয়া শান্তিপুর মিনিউসিপাল হাইস্কুলে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।