Kanchenjunga: বরফহীন কাঞ্চনজঙ্ঘার কালোরূপের ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। হিমবাহহীন শৃঙ্গের এই রূপ দেখে জলবায়ু নিয়ে আতঙ্কিত পরিবেশবিদরা। জানুুন বিশদে…
Kanchenjunga Peak: সিকিম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার 'কালো' রূপ — হিমবাহহীন শৃঙ্গ ঘিরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদের আশঙ্কা। সাম্প্রতিক একটি ভিডিওতে বরফহীন কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ার দৃশ্য দেখে উদ্বিগ্ন সিকিমবাসী। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গটি, যেটি সাধারণত বরফে মোড়া থাকে, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে প্রায় নিঃস্নো অবতারে—কালচে গাঢ় রঙের পাথরের পাহাড়, শুধু কিছু হালকা বরফের রেখা রয়ে গেছে ঢালে।
সিকিম সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মহেন্দ্র পি. লামা গত শুক্রবার সকালে গ্যাংটক থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলেন, “শুভ সকাল। আজ ৩০ মে, ২০২৫। গ্যাংটক থেকে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। জীবনে কখনো কাঞ্চনজঙ্ঘাকে এভাবে দেখিনি—বরফহীন। পুরো পাহাড়টা যেন একেবারে কালো, শুধু কিছু রেখার মতো বরফ দেখা যাচ্ছে।”
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব এবার স্পষ্টভাবে দেখা দিল কাঞ্চনজঙ্ঘার বুকে। সাধারণত বছরের অধিকাংশ সময়ে বরফে ঢাকা থাকে যে কাঞ্চনজঙ্ঘা, সেই মহাশৃঙ্গ আজ কালো ছায়ায় মোড়া। পাহাড়ের গায়ে বরফের পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে, শুধুমাত্র কিছু অংশে অল্প বরফ দৃশ্যমান।
এই ছবি দেখেই পরিবেশবিদ ও গবেষকরা চিন্তিত। বরফগলা পাহাড় মানে শুধু সৌন্দর্যহানি নয়, এর প্রভাব পড়বে গোটা পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর। বিশেষত, হিমবাহ গলা জলের উপর নির্ভরশীল পাহাড়ি নদীগুলি যেমন তিস্তা, রংগিত, রঞ্জিৎ ও অন্যান্য ছোটো বড়ো নদীগুলির জলের উৎস যদি শুকিয়ে যেতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলজুড়ে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ জলসংকট ও খরা। পাহাড়ি এলাকাগুলিতে কৃষিকাজ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, এমনকি পানীয় জলের জোগান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক দশকে হিমালয়ের তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে হিমবাহ দ্রুত হারে গলছে। এর ফলে শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, গোটা হিমালয় পর্বতশ্রেণির পরিবেশগত কাঠামো বিপন্ন হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পর্যটনের চাপে পাহাড়ি পরিবেশ ক্রমেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরিকল্পিত নির্মাণ, যানবাহনের ধোঁয়া, প্লাস্টিক দূষণ প্রভৃতি আরও ত্বরান্বিত করছে বরফ গলার প্রক্রিয়া।
পরিবেশবিদদের কথায় “এটা একটা রেড অ্যালার্ট। কাঞ্চনজঙ্ঘার মতো উচ্চ শৃঙ্গ যদি এইভাবে বরফ হারাতে শুরু করে, তাহলে সিকিম ও উত্তরবঙ্গ সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিবেশ ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এখনই যদি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় স্তরে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটা এক কঠিন সংকট ডেকে আনবে।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


