Deepavali 2025: দীপাবলির আর হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিন বাকি। তার আগেই শ্যামা মায়ের আরাধনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে মানিকড়ার কালীপুজোর। বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…
Deepavali 2025: আজও ডাকাতদের প্রথা মেনে মশাল জ্বালিয়ে হয় মানিকড়ার কালীপুজো। দেবীর চোখ ঢেকে বলিদানের প্রথা আজও অটুট। রয়েছে নানান অলৌকিক কাহিনী। ডাকাতদের হাতের কালীপুজো বর্তমানে সার্বজনীন, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। উমার বিদায়।
মানিকাড়ার কালীপুজোর ইতিহাস:-
শ্যামার আগমন। প্রতীক্ষার পাঁচ দিন। প্রাচীন রীতি মেনে এখনও মশাল জ্বালিয়ে পুজিতা হন মানিকোড়া কালী তথা ডাকাত কালী। ডাকাতদের হাতে পূজিতা দেবী এখন মানিকোড়া কালী নামে পরিচিত। শোনা যায় ডাকাতদের দল নাকি প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি সময় আগে ওপার বাংলা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে পুনর্ভবা নদী পেরিয়ে রাতের অন্ধকারে জঙ্গলে ঘেরা মানিকোড়ায় দেবীর পুজো দিতে আসতেন।
সূর্য ওঠার আগেই পুজো দিয়ে আবার নিজেদের ডেরায় ফিরে যেতেন ডাকাতরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদের পরিবর্তন ঘটেছে। ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় এক জমিদার জঙ্গলে ঘেরা এই পরিত্যক্ত পুজোর বেদি খুঁজে পান। এরপর থেকে বংশপরম্পরায় জমিদারদের উদ্যোগে এই পুজো হত। এখন জমিদারি নেই গ্রামের সকলে মিলে এই পূজো করেন। মালদহের হবিবপুর ব্লকের মানিকোড়া কালী এখন সার্বজনীন।
জনশ্রুতি, কোনও এক সময় গ্রামে শাঁখা ফেরি করতে এসেছিলেন শাঁখারি। গ্রামের পথে একটি মেয়ে তার কাছে শাখা পড়তে চায়। শাঁখারি তার হাতে শাঁখা পরিয়ে দেন। কিন্তু দাম চাইতেই বলেন, তার কাছে পয়সা নেই৷ শাঁখার দাম তার বাবা দেবেন। কালী মন্দিরের সেবায়েতকে তার বাবা বলে সম্বোধন করেন।
শাঁখারি কালী মন্দিরে গিয়ে সেবায়েতের কাছে শাঁখার দাম চাইতেই অবাক হয়ে যান ওই সেবায়েত। তিনি জানান, তাঁর কোন মেয়ে নেই। কে শাঁখা পরেছে। হঠাৎ তাঁর নজর যায় পাশের পুকুরের দিকে। দেখতে পান জলের ওপরে একটি মেয়ে দুই হাত উঁচু করে রয়েছে। দু’টি হাতে রয়েছে একজোড়া নতুন শাঁখা। মুহূর্তে সেবায়েত বুঝে যান, ওই মেয়ে আর কেউ নন স্বয়ং মা কালী। মুহূর্তের মধ্যেই শাঁখার দাম মিটিয়ে দেন তিনি।
লোকমুখে শোনা যায়, পুজোর গভীর রাতে চক্ষুদান ও পাঁঠা বলির সময় এই দেবীমূর্তি কেঁপে ওঠে ও সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যাতে মূর্তিটি না নরে যায় সেই জন্য আগে দেবী মূর্তিটিকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার প্রচলন ছিল। এখন চক্ষুদান ও পাঁঠা বলির সময় শুধু দেবীর মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। পুজোকে ঘিরে সাতদিন ব্যাপী চলে জমজমাট মেলা ও গানের আসর।
এদিকে মানিকোড়া ডাকাত কালী ভক্তদের কাছে খুবই জাগ্রত। প্রতিবছর এই কালী পুজোয় দুই থেকে তিন হাজার পাঁঠা বলি হয়ে থাকে। শুধুমাত্র মালদহ জেলা নয় বর্তমানে রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে থেকে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


