সংক্ষিপ্ত
২৩ জুলাই রাতের অন্ধকারে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তারপর দেখতে দেখতে ১০০ দিন জেলেই পার করলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। আগামী ৩০ নভেম্বর পরবর্তী শুনানিন দিন ধার্য করেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।
দেখতে দেখতে জেলের কুঠরিতেই ১০০ দিন পার করলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আপাতত তাঁর মুক্তি নেই। স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও জামিন পাননি তিনি। আপাতত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে জেলেই থাকতে হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ২৩ জুলাই রাতে তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাশি রাশি টাকা। কিন্তু সেই টাকার উৎস সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি তাঁরা। আর সেই কারণে প্রথম এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট গ্রেফতার করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তদন্তকারীদের অনুমান টাকার বিনিময় চাকরি দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই তোলা হয়েছিল এই বিপুল পরিমাণ টাকা। যাইহোক পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও টাকার কোনও উৎস সন্ধান দিতে পারেননি। অন্যদিকে অর্পিতা জানিয়েছেন এই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর কাছে রাখতে দিয়েছিলেন। এর বেশ আর তিনি কিছুই জানেন না।
যাইহোক স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই ও ইডি। দুটি চার্জশিটেই তাঁকে মূল চক্রী হিসেবে দাবি করা হয়েছে। সূত্রের খবর সিবিআই চার্জশিটে দাবি করা করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অঙ্গুলি হেলনেই শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম হয়েছে। অন্যদিকে ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিশাল অঙ্কের বেআইনি টাকার কথা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে।
জেলে হেফাজতে থাকার ৯৯ দিনের মাথায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন শুনানির কারণে। আর গতকালই তিনি বলেছিলেন, 'এখানে আমার ১০০টি কাটতে চলল। কিছুই পাওয়া যায়নি।' তবে তিনি গতকাল আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। আগামী ১ মাস তাঁকে জেলে বন্দি হিসেবেই থাকতে হবে প্রেসিডেন্সি জেলে।
গত জুলাই মাস থেকেই ফাঁড়া যাচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। কারণ স্কুল শিক্ষক নিযোগ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ায় রীতিমত বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে একটা সময় তৃণমূলের উচ্চ পদে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যের মন্ত্রিত্ব গেছে। খোয়াতে হয়েছে দলীয় পদও। তবে দল মুখ ফিরিয়ে নিলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় গতকালও আদালত চত্ত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন তিনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতা মন্ত্রী জেলে গিয়েছিলেন। সারদাকাণ্ডে মদন মিত্র জেল হেফাজতে ছিলেন। কিন্তু সেই সময় আদালতের নির্দেশ না থাকায় তিনি অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছিলেন এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পালও দীর্ঘ দিন কাটিয়ে ছিলেন হাসপাতালে। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ থাকায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসকেএম-মুখো হতে পারেননি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হচ্ছে জোকা ইএসআই হাসপাতাল থেকে, যেটি পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর গ্রেফতারের আগে তাঁকে এসএসকেএম বা রাজ্যের কোনও হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে সোজা ভূবনেশ্বরের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেখানের চিকিৎসকরা অবশ্য ফিট সার্টিফেকেটই দিয়েছিলেন। যাইহোক ৯৯ দিনের মাথায় অর্থাৎ স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শেষ শুনাতিতেও জামিন চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ব্যাঙ্কশাল আদালত সেই জামিনের আবেদনই নাকচ করে দিয়েছে।
অনুব্রত অথবা মানিক নন, একা পার্থকে নিয়েই কেন বিড়ম্বনায় তৃণমূল? দলের সিদ্ধান্ত জানালেন সৌগত রায়
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে চার্জশিট CBI-র, শান্তিপ্রসাদ-সহ ১২ জনের নাম
পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় কি রণেভঙ্গ দিলেন ? আগামী ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ পার্থ-সহ বাকিদের