Tmc Clash News: ফের প্রকাশ্যে  তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। অখিল গিরিকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের। বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন… 

Tmc Clash News: ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে! বিধায়ক অখিল গিরিকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য পঞ্চায়েত প্রধান সুশান্ত পাত্রের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সৈকত নগরী দীঘায় ফের একবার প্রকাশ্যে এল তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। রামনগর ১ ব্লকের পদিমা ২ অঞ্চল তৃণমূলের উদ্যোগে ওল্ড দিঘার রাজবাড়ী কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় বিজয়া সম্মিলনী। তবে এই সাংগঠনিক কর্মসূচিকে ঘিরে শুরু হয়েছে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা।

ঠিক কী ঘটেছে?

এই বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি, কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি, রামনগর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি উত্তম দাস, রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাইচরণ সার, দলের ব্লক আইএনটিটিইউসি সভাপতি অশোক চন্দ, পদিমা ২ অঞ্চল তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি বিশ্বজিৎ জানা, দেবব্রত দাস, দীপঙ্কর সুঁই, শান্তনু কুন্ডু, পার্থসখা জানা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, দলের একাংশের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব এই সভায় সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। গরহাজির ছিলেন পদিমা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র, উপ-প্রধান সুজিত কর, প্রায় ১০ জন বুথ সভাপতি, এবং তৃণমূলের শাখা সংগঠনের একাধিক কর্মী ও সমর্থক। এই অনুপস্থিতি ঘিরেই শুরু হয়েছে তীব্র চর্চা ও রাজনৈতিক গুঞ্জন।

যদিও রামনগর ১ ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্বের দাবি— “এই কর্মসূচি দলের নির্দেশ মোতাবেক হয়েছে। সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু কেউ কেউ ব্যক্তিগত কারণে আসেননি।” অন্যদিকে, গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগকে খারিজ করতে চেয়েছেন অনেকেই। তবে তৃণমূলের অন্দরে যে সব কিছু ঠিক নেই, তা ফের পরিষ্কার হয়ে গেল এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই।

এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিধায়ক অখিল গিরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর নীরবতার মাঝেই আরও বেড়েছে রহস্য। অন্যদিকে, পাল্টা কটাক্ষ করেছেন পদিমা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “এই কর্মসূচি কে বা কারা করেছে আমি জানি না। আমাকে কেউই ডাকে নি। বিধায়কের এখন বয়স হয়েছে, তাই মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সেইজন্যই উল্টোপাল্টা মন্তব্য করছে।”

তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে রামনগর ও দিঘা অঞ্চলে ব্যাপক চাঞ্চল্য। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রকাশ্যে এমন ভাষায় বিধায়ককে আক্রমণ করা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এতে তৃণমূলের অন্দরের বিভাজন আরও প্রকট হল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রামনগর ১ ব্লক তৃণমূলের অন্দরে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর চলছে। একদিকে বিধায়ক অখিল গিরির ঘনিষ্ঠ নেতৃত্বরা, অন্যদিকে পঞ্চায়েত প্রধান সুশান্ত পাত্রের অনুগামীরা। দলের অনুষ্ঠান ঘিরে এই অনুপস্থিতি সেই দ্বন্দ্বকেই ফের সামনে নিয়ে এসেছে।

দলের উচ্চ নেতৃত্ব যদিও এই মুহূর্তে চুপ, তবে তৃণমূলের ঘরোয়া সূত্রের মতে— শীঘ্রই এই বিষয়ে জেলার পর্যবেক্ষক রিপোর্ট চেয়ে পাঠাতে পারেন রাজ্য নেতৃত্ব। রাজনীতির আঁচে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সৈকত নগরী দিঘা থেকে রামনগর পর্যন্ত তৃণমূলের অন্দরমহল। বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চে উৎসবের রঙের বদলে এখন সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কালো ছায়া।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।