চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমী ও অষ্টমীতে শিতল পান্তা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এই তিথিকে শীতল সপ্তমী এবং শীতল অষ্টমী বলা হয়। এই দিনগুলিতে শীতলা মায়ের পুজো হয়ে থাকে। কিছু অঞ্চলে এই উৎসবটি সপ্তমীতে এবং কিছু অঞ্চলে অষ্টমীতে উদযাপিত হয়। আজ দেশের বহু অংশে পালিত হচ্ছে শীতলা পুজো। ১৬ ও ১৭ মার্চ সোম ও মঙ্গলবার জুড়ে পূজিত হবেন মা শীতলা। এই দু'দিনে শীতল মাতার জন্য একটি ব্রত রাখা হয়। এই ব্রত পালন করা লোকেরা এই দিনগুলিতে বাসি বা ঠাণ্ডা খাবার খান। সপ্তমী বা অষ্টমীতে ঠাণ্ডা খাবার খাওয়া ঠাণ্ডার প্রকোপের কারণে সম্পর্কিত রোগের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
আরও পড়ুন- এই মাস কেমন প্রভাব ফেলবে মকর রাশির উপর, দেখে নিন
আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গার অবতার হিসাবে, তিনি পক্স, ঘা, ব্রণ, ফুস্কুড়ি প্রভৃতি রোগ নিরাময় করেন এবং পিশাচ এর হাত থেকেও রক্ষা করেন। দোলযাত্রা থেকে আট দিন পরে শীতলা অষ্টমীর দিন দেবী শীতলার আরাধনা করা হয়। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসানুসারে এই দেবীর প্রভাবেই মানুষ বসন্ত, প্রভৃতি চর্মরোগাক্রান্ত হয়। এই কারণেই গ্রাম বাংলায় বসন্ত রোগ মায়ের দয়া নামে অভিহিত হয়ে থাকে। তাই কেউ বসন্তে আক্রান্ত হলে দেবী শীতলাকে পূজা নিবেদন করে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির আরোগ্য কামনা করা গ্রামীণ হিন্দু সমাজের প্রধান রীতি। এই পুজো কোথাও কোথাও বসন্তবুড়ী ব্রত নামেও পরিচিত। মাঘ মাসের ষষ্ঠ দিনে দেবী শীতলার পুজো করা হয়। শীতলা দেবীর বাহন গাধা বা গর্ধব। প্রচলিত মূর্তিতে শীতলা দেবীর এক হাতে জলের কলস ও অন্য হাতে ঝাড়ু দেখতে পাওয় যায়। ভক্তদের বিশ্বাস কলস থেকে তিনি আরোগ্য সূধা দান করেন এবং ঝাড়ু দ্বারা রোগাক্রান্তদের কষ্ট লাঘব করেন।
আরও পড়ুন- সূর্য প্রবেশ করছে মীনে, রাশি পরিবর্তন করবে আরও ৫টি গ্রহ জেনে নিন তার প্রভাব
শীতলা পুজো উত্তর ভারতের অঞ্চলে ভীষণ ভাবে জনপ্রিয়। কিছু ক্ষেত্রে তাঁকে শিবের সঙ্গী পার্বতী বলেও চিহ্নিত করা হয়। শীতলাকে মাতা, মরশুমি দেবী হিসাবে সম্বোধন করা হয় এবং ঠাকুরানী, জগৎরানী, করুণাময়ী, মঙ্গলা, ভগবতী, দয়াময়ী নামেও অভিহিত করা হয়। দক্ষিণ ভারতে দেবী শীতলার ভূমিকাটি অবতার মারিয়ম্মান বা মারিয়াত্থা নিয়েছেন, যাকে দ্রাবিড় ভাষী লোকেরা উপাসনা করেন। হরিয়ানা রাজ্যের গুড়গাঁওয়ে শীতলাকে কৃপী গুরু দ্রোণাচার্যের স্ত্রী বলে মনে করা হয় এবং গুড়গাঁওয়ের শীতলা মাতা মন্দিরে পুজো হয়ে থাকে।