প্রতি বছর কৃষ্ণপক্ষ ও শুক্লপক্ষের এগারোতম দিনে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। জেনে নিন এই পুজোর মাহাত্ম্য।
হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত আছে একাধিক উৎসবের (Festival) কথা। শুধু দুর্গোৎসব, কালীপুজো কিংবা জগধাত্রী পুজো নয়। বাঙালির বারো মাসে তেরা উৎসব। অরন্ধন, রাসযাত্রা, ইতু পুজো- শাস্ত্রে রয়েছে একাধিক পুজোর উল্লেখ। এছাড়া, প্রদোষ ব্রত, বৈকুন্ঠ চতুদর্শী, কাল ভৈরব জয়ন্তী-সহ রয়েছে একাধিক পুজো। এমনই আরও একটি উল্লেখ যোগ্য পুজো হল উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। প্রতি বছর কৃষ্ণপক্ষ ও শুক্লপক্ষের এগারোতম (11th) দিনে পালিত হয় এই উৎসব।
প্রতিবছর মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ১১ তম দিনে পড়ে উৎপন্না একাদশী তিথি। প্রচলিত আছে, এই দিন বিষ্ণুর শরীর থেকে আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী একাদশী। এই একাদশীর ঠিক ১৫ দিন পরে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। এবছর উৎপন্না একাদশী পালিত হবে ৩০ নভেম্বর। এদিন শ্রীবিষ্ণুর ভক্তরা একাদশীর ব্রত পালন করে থাকেন। এদিন উপবাস করে ভক্তরা শ্রী বিষ্ণুর পুজো করেন।
শাস্ত্র মতে, উৎপন্না একাদশীর দিন দেবী একাদশী (Lord Ekadashi) জন্ম হয়। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি মুরাসুন নামক একটি রাক্ষসকে হত্যা করে ছিলেন। শ্রী বিষ্ণু (Lord Bishnu) নিদ্রায় থাকাকালীন তাঁর শক্তি থেকে জন্ম হয় দেবী একাদশীর। জানা যায়, শ্রী বিষ্ণু নিদ্রায় থাকাকালীন মুরাসুন ভগবান শ্রী বিষ্ণুকে আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় বিষ্ণু শক্তি থেকে জন্ম হয় দেবী একাদশীর। দেবী একাদশী হত্যা করেছিলেন মুরাসুনকে। তাই ভগবান বিষ্ণুর ভক্তরা এদিন ব্রত পান করেন।
ভগবান বিষ্ণুর ভক্তরা প্রতি চন্দ্র পাক্ষিকে একাদশী তিথিতে পালন করে উৎপন্না একাদশী(Utpanna Ekadashi)। মোক্ষ লাভের উদ্দেশ্যে ভক্তরা এই ব্রত পালন করেন। মাঘ মাসে একাদশী তিথি বা কার্তিক মাস, কৃষ্ণপক্ষে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী। এই একাদশীকে অনেকে গৌন একাদশী বলে। এদিন শ্রী বিষ্ণুকে কেশব রূপে পুজো করা হয়।
দক্ষিণ ভারত মূলত তামিলনাড়ু, কেরালা-র মতো জায়গায় উৎপন্না একাদশী পালনের রীতি আছে। তামিল ক্যালেন্ডার অনুসারে কার্তিক মাসে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। তেমনই, মালায়লাম ক্যালেন্ডার অনুসারে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী। এবছর উৎপন্না একাদশী পালিত হবে ৩০ নভেম্বর। ৩০ নভেম্বর ভোর ৪.১৩ মিনিটে পড়ছে। আর শেষ হবে ১ ডিসেম্বর সকাল ২.১৩ মিনিটে। সংসারের সুখ, শান্তি বজায় রাখতে, দাসত্ব মুক্তি, বন্ধন মুক্তির আশায় ও স্বাধীনতা লাভের আশা পালিত হয় এই পুজো।